নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

একুশ মানে অহংকার

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। এটি কেন মহান? সেটি শুধু বাংলাদেশি নন, বিশ্ববাসীও জানেন। দিনটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতীয় ইতিহাসের এ দিনটি একদিকে যেমন স্মরণের, অন্যদিকে উজ্জীবিত হওয়ার। মায়ের ভাষাকে ছিনিয়ে আনার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা। আর তাই একুশ মানে বাঙালি জাতির মাথা নত না করার দিন। অহংকারের দিন।

মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে ৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বাররা আত্মোৎসর্গ করেছিলেন। তাদের সে আত্মদানের কথা আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের স্বীকৃতির ফলে কার্যত ভাষাশহীদরাও বিশ্বব্যাপী বিরল সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন। হাজার বছর ধরে জাতির অভ্যন্তরে যে স্বকীয় বৈশিষ্ট্য লালিত হয়ে আসছিল, কার্যত ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ইতিহাসের শরণাপন্ন হলে এ কথা বলতেই হবে, ব্রিটিশ আমলেই ব্রিটিশমুক্ত ভারতে লিঙগুয়াফ্রাঙ্কা হিসেবে হিন্দি-উর্দুর পাশাপাশি বাংলার প্রস্তাব করেছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। ভাষা আন্দোলনের অনিবার্য সুফল হিসেবে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় এবং ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়।

কথা হচ্ছে, একুশ নিয়ে এখন দিবস পালন করা হচ্ছে। বর্ণমালার টি-শার্ট গায়ে দিয়ে কেবল একুশের দিনে ঘোরাঘুরি হচ্ছে। সেই একুশের চেতনা হৃদয়ে কতটা ধারণ করতে পারছি আমরা। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি মাতৃভাষার জন্য রক্ত দেওয়ার পর থেকে তো অনেক বছর কাটল। সে সময়কার মানুষের হৃদয়ে যতটা একুশে ফেব্রুয়ারি দাগ কেটেছিল, যতটা গুরুত্ব ছিল, এখনকার প্রজন্মের কাছে ততটা নেই সত্যি; কিন্তু যা আছে তা কি রক্ত দিয়ে অর্জিত ভাষার জন্য যথেষ্ট? প্রশ্ন থেকে যায়। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারি এলে মিডিয়ার কর্মকা- দেখে ভালোই লাগে। চতুর্দিকে একুশের আবহ তৈরি করে দেয়। অনুষ্ঠান প্রচার, একুশ নিয়ে টকশো, নাটক, সিনেমা ও গণমাধ্যমের পাতাজুড়ে বড় বড় ছবি দিয়ে একুশকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের চেতনায় ও মগজে।

বাঙালির ইতিহাসে বায়ান্ন এসেছিল বলে একাত্তর এসেছে; পরে আমরা স্বাধীন জাতির স্বীকৃতি পেয়েছি। যে চারটি বড় স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার অন্যতম প্রধান স্তম্ভটি হলো জাতীয়তাবাদ। আবার এ জাতীয়তাবাদের চেতনাবাহী প্রধানতম স্তম্ভ হলো ‘ভাষা’। আমরা আমাদের বাংলা ভাষা নিয়ে গর্বিত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close