নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

শতাধিক ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণ আজ

তালিকায় আছে বদির ভাই-ভাগিনা-বেয়াই

সৈকত নগরী কক্সবাজারের টেকনাফে আজ এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করবে দেড়শতাধিক ইয়াবা কারবারি। তাদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজারের আলোচিত বিদায়ী এমপি বদির ভাই-ভাগিনা, বেয়াইসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।

মরণনেশা ইয়াবার কবল থেকে দেশকে রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মাদকবিরোধী অভিযানে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যাচ্ছে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারিরা। এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। তাই দেশকে মাদকমুক্ত করতে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো ইয়াবা কারবারিরা আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। আজ সকাল ১০টায় টেকনাফ উপজেলার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রায় ১৬০ ইয়াবা কারবারি স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে আত্মসমর্পণ করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে।

পুলিশ জানায়, আত্মসমর্পণকারী ১৬০ ইয়াবা কারবারি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

সকালে তাদের টেকনাফে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে প্রতীকী ইয়াবা ট্যাবলেট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করবে।

এই আনুষ্ঠানিকতার জন্য বৃহস্পতিবার থেকেই পুলিশের আইজি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। আত্মসমর্পণকালে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণমান্যরা উপস্থিত থাকবেন।

ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ ও সুযোগ দিয়ে গত বুধবার থেকে টেকনাফের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হয়। এরই মধ্যে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখানে ১০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা রয়েছে। পুরো মাঠে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে, শেষবারের মতো শুক্রবার সকালে পুলিশ সুপার মঞ্চ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এরই মধ্যে দেড় শতাধিক তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত ইয়াবা চোরাকারবারি আত্মসমর্পণের জন্য জড়ো হয়েছে। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবে।

পুলিশ হেফাজতে থাকা ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে রয়েছে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই আবদুর শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমিনুর রহমান ওরফে আবদুল আমিন, ফয়সাল রহমান, বদির ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, আরেক ভাগিনা টেকনাফ পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর ওরফে নুরশাদ, ইয়াবা ডন হাজি সাইফুল করিমের দুই শ্যালক জিয়াউর রহমান ও আবদুর রহমান। টেকনাফের পশ্চিম লেদার নুরুল কবির, হ্নীলা সিকদারপাড়ার সৈয়দ আহম্মদ সৈয়দ, বন্দুকযুদ্ধে নিহত নাজিরপাড়ার শীর্ষ ইয়াবা কারবারি জিয়াউর রহমানের ভাই আবদুর রহমান, নাজিরপাড়ার সৈয়দ হোসেন, নাইটংপাড়ার ইউনুস, ডেইলপাড়ার জাফর আলম, জাহাজপুরার নুরুল আলম, হ্নীলার রশিদ আহম্মদ ওরফে রশিদ খুলু, সদরের ডেইল পাড়ার আবদুল আমিন ও নুরুল আমিন, টেকনাফ সদরের উত্তর লম্বরি এলাকার করিম মাঝি, হ্নীলা ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী, শামলাপুর জুমপাড়ার শফিউল্লাহ, একই এলাকার সৈয়দ আলম, রাজাছড়ার আবদুল কুদ্দুছ ও মধ্যম জালিয়াপাড়ার মোজাম্মেল হক।

এ ছাড়া আছে জাহেলিয়াপাড়ার মোহাম্মদ সিরাজ, কচুবনিয়ার আবদুল হামিদ, নাজিনপাড়ার মোহাম্মদ রফিক, পল্লানপাড়ার মোহাম্মদ সেলিম, নাইটংপাড়ার রহিমউল্লাহ, নাজিরপাড়ার মোহাম্মদ হেলাল, চৌধুরীপাড়ার মোহাম্মদ আলম এবং সদর ইউনিয়নের মৌলভীপাড়ার একরাম হোসেন। হ্নীলার পূর্ব পানখালীর নজরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার নুরুল বশর, হাতির ঘোনার দিল মোহাম্মদ, একই এলাকার হাসান, সাবরাং নয়াপাড়ার নূর মোহাম্মদ, কচুবনিয়ার বদিউর রহমান ওরফে বদুরান, জালিয়াপাড়ার জুবায়ের হোসেন, হ্নীলার পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম, মং সিং থেইন ওরফে মমসি, কামরুল হাসান রাসেল ও মারুফ বিন খলিল বাবু।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close