ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে গরু জব্দ করা নিয়ে সংঘর্ষ

বিজিবির গুলিতে নিহত ৩

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় গরু জব্দ করা নিয়ে গ্রামবাসী ও বিজিবি সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় বিজিবির গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ১৫ জন। নিহতরা হলেনÑ বকুয়া ইউনিয়নের রুহিয়া গ্রামের নবাব (৩০) ও সাদেক মিয়া (৪০) এবং বহরমপুর গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়নাল (১৪)।

হরিপুর থানার ওসি মো. আমিরুজ্জামান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ যাওয়ার পর বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে চলে যায়। এলাকাবাসী লাশ ঘিরে বিক্ষোভ করেছে। ঘটনার জন্য দায়ী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি দাবি করেন তারা।

স্থানীয়রা জানায়, বহরমপুর গ্রামের এক ব্যক্তি সকালে গরু নিয়ে তা বিক্রির জন্য যাদুরানী বাজারের উদ্দেশে বের হন। ওই গরু পাচার করে আনা হয়েছে সন্দেহে বেতনা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা তা জব্দ করতে গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বিজিবির গুলিতে ঘটনাস্থলে নবাব ও সাদেক মিয়া নিহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়নাল নিহত হন। এছাড়াও এ ঘটনায় বিজিবির গুলিতে আহত হয়েছেন আরো ১৫ জন। আহতরা দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্যদিকে বিজিবি সদস্যরা বলছেন, ভারতীয় গরু আটক করায় সশস্ত্র চোরা কারবারিরা হামলা করলে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হন। ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, গরুগুলো ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা। সংঘবদ্ধ চোরা কারবারিরা কোনো একসময় নিয়ে এসেছিল। ভারতীয় গরুগুলো আমাদের বিজিবি সদস্যরা জব্দ করার চেষ্টা করে। এ সময় দুই-তিনশ লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আমরা প্রথমে ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আমরা গুলি করতে বাধ্য হই।

এদিকে গুলিতে হতাহতের খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বহরমপুর গ্রামে যান। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বহরমপুর গ্রামে চোরাই গরু ঢুকেছে সন্দেহে বিজিবি অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি গরু জব্দ করে। এ সময় গ্রামবাসীর সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবির গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন (সার্বিক) নুর কুতুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক আখতারুজ্জামান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close