বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যে ভোটকেন্দ্র হলে রেখেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (ডাকসু) তফসিল ঘোষণা হয়েছে। আগামী ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। প্রার্থী হওয়ার শেষ সময় ২ মার্চ; যাচাই-বাছাই শেষে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবে ৩ মার্চ। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ৫ মার্চ। গতকাল সোমবার সকালে ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন এই নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান।

তিনি জানান, হলে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দিতে পারবেন। গণনা শেষে সেদিনই ঘোষণা করা হবে ভোটের ফল।

ডাকসুতে পদাধিকার বলে উপাচার্য সভাপতির দায়িত্বে থাকেন। বাকি ২৫টি পদে নির্বাচন হবে। পদগুলো হল সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজ সেবা সম্পাদক এবং ১৩ জন সদস্য।

হলগুলোর প্রাধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে হলের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। পরে ওইদিনই মনোনয়নপত্র বাছাই করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

প্রকাশিত তালিকার বিষয়ে কোনো প্রার্থীর আপত্তি থাকলে তা ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার মধ্যে ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ২ মার্চ। ৩ মার্চ হলের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা। তবে প্রচার ও প্রচারণার বিষয়ে তফসিলে কিছু বলা হয়নি। এ বিষয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে তারপর আর নির্বাচন হয়নি। ডাকসু নির্বাচন চেয়ে আদালতে রিট আবেদন হয়েছিল তাতে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা আসে গত বছর হাইকোর্ট থেকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনে ওই আদেশ স্থগিত করেছিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগ গত ৬ জানুয়ারি সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিলে নির্বাচন আয়োজনের বাধা কাটে। এরপর নির্বাচনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমানকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং আরো পাঁচজনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা হলেন মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অমল কৃষ্ণ হালদার, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

"