ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

মাশরাফিদের হারিয়ে ফাইনালে সাকিবের ঢাকা

শিরোপা ধরে রাখা কতটা কঠিন সেটা এবারের বিপিএলের শুরুর দিকে টের পেয়েছে রংপুর রাইডার্স। সেই ধাক্কা কাটিয়ে অবশ্য ঠিকই প্লে-অফ পর্বে উঠেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারল না মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। ফাইনালে ওঠার দ্বিতীয় সুযোগটাও হাতছাড়া করেছে গত আসরের শিরোপাধারীরা। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে স্বপ্নের মঞ্চের টিকিট কেটেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। প্লে-পর্বের দুই ম্যাচের দুটোতে জিতে হারানো রাজত্ব উদ্ধারের প্রান্তসীমায় চলে এসেছে সাকিব আল হাসানের দল।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচের শুরুতেই একবার হেরে বসেছে রংপুর রাইডার্স। মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে জিতে মাশরাফির হাতে ব্যাট তুলে দেন ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক সাকিব। আগে ব্যাট করতে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি রংপুর। নির্ধারিত কুড়ি ওভারটুকু খেলতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতেই ১৪২ রানে গুটিয়ে গেছে মাশরাফির দল। জবাব জিতে নেমে ২০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে দারুণ জয়ে ফাইনালে উঠে যায় সাকিবের ঢাকা (১৪৭)। কাল একই মঞ্চে শিরোপা লড়াইয়ে আরেক সাবেক চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মুখোমুখি হবে ঢাকা ডায়নামাইটস। দুই দলের জন্যই ম্যাচটা হারানো শিরোপা উদ্ধারের উপলক্ষ্য হয় উঠছে।

অথচ রংপুরের শুরুটা ভালোই ছিল। চতুর্থ ওভার শেষ হওয়ার আগেই উদ্বোধনী জুটিতে ৪২ রান যোগ করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এরপরই হঠাৎ ধসে পড়ে রংপুরের টপ অর্ডার। পর পর ৩ বলে ৩ উইকেট তুলে নেয় ঢাকা। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নাদিফ চৌধুরীকে সাজঘরে পাঠান শুভাগত হোম। পরের ওভারে আরো বড় ধাক্কা খায় রংপুর। দুই বলে ক্রিস গেইল ও রাইলি রুশোর উইকেট তুলে নেন রুবেল হোসেন। ডানহাতি পেসারের মেডেন ওভারসহ জোড়া উইকেটে পুরোপুরিভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়ে মাশরাফির দল।

১২ বলে ২৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে বিদায় নেন নাদিফ। ফেরার আগে তিনটি ছক্কা ও দুটি চারের ঝড় উঠেছিল তার ব্যাটে। উইকেটে থিতু হয়ে আউট হওয়া গেইল ১৩ বলে ১৫ রান করেছেন। আসরজুড়ে ফর্মের তুঙ্গে থাকা রাইলি রুশো তো ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরেছেন। শুরুর এই ভয়াবহ বিপর্যয় রংপুর প্রায় কাটিয়ে উঠেছিল চতুর্থ উইকেট জুটিতে। রবি বোপারা ও মোহাম্মদ মিঠুন যোগ করেন ৬৪ রান। এই দুজন আউট হতেই ফের তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে রংপুরের মিডল ও লোয়ার অর্ডার। ৪৩ বলে ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন বোপারা। ২৭ বলে ৩৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন মিঠুন। এই দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় চ্যালেঞ্জির সংগ্রহের আভাস দিচ্ছিল। কিন্তু রংপুরের বড় সংগ্রহের আশাটা মাটি করে দেয় ঢাকার দুর্দান্ত বোলিং বিভাগ। ৪ উইকেট তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের ধসিয়ে দিয়েছেন রুবেল হোসেন। দুটি শিকার অনিক কাজীর।

১৪৩ রানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় ঢাকা। স্কোর বোর্ডে ৪ রান যোগ হতেই আউট হয়ে যান উপুল থারাঙ্গা। তাতে করে লড়াইয়ের একটা আভাস মিলেছিল। ৯৭ রানের মধ্যে ঢাকার ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচটা জমিয়ে দিয়েছিল রংপুর। কিন্তু শেষ দিকে চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়ে আন্দ্রে রাসেল। ১৯ বলে ৪০ রানের হার না মানা টর্নেডো ইনিংস খেলে অনায়েসেই ঢাকাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। ইনিংসে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন রাসেল। এর মধ্যে ইনিংসের নাজমুল ইসলামকে পরপর তিন বলে ছক্কা মেরে ম্যাচটা শেষ করে দেন ক্যারিবীয় সেনসেশন। ঢাকার জয়ে অবদান আছে রনি তালুকদারেরও। ২৪ বলে ৩৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দুর্ভাগ্যবশত রান আউটের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। এছাড়া সাকিব ২০ বলে ২৩ এবং ৮ বলে ১৪ রান করেছেন সুনিল নারাইন। দ্বিতীয়জন অবশ্য বল হাতেই দ্যুতি ছড়িয়েছেন। চার ওভারে উইকেটশূন্য থাকলেও মাত্র ১৮ রান দিয়েছিলেন তিনি। তবে বল হাতে রংপুরের ব্যাটিং অর্ডার ধসিয়ে দিয়ে প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন রুবেল হোসেন। এবিডি ভিলিয়ার্স ও অ্যালেক্স হেলসের অভাব ভালোভাবে টের পেল রংপুর রাইডার্স।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close