নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ভাষা শহীদদের স্মরণে যা কিছু প্রথম

ভাষা আন্দোলন আমাদের চেতনার বাতিঘর। ভাষার অধিকার আদায়ের সেই রাজপথ রঞ্জিত করা ঘটনা এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের একুশ এখন বিশ্বের। এমন অনেক ঘটনা আছে একুশকে ঘিরে যা আমাদের দেশ তথা সারা বিশ্বের জন্য মাইলফলক।

একুশের প্রথম গান : ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে প্রথম গানের রচয়িতা ভাষা সৈনিক আ ন ম গাজিউল হক। ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আর্মানিটোলা ময়দানের জনসভায় গানটি গাওয়া হয়। গানটির প্রথম চরণ হলো, ‘ভুলব না, ভুলব না, একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলব না’।

প্রভাত ফেরিতে প্রথম গান : ১৯৫৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রকৌশলী মোশাররফ উদ্দীন আহমদ প্রথম প্রভাত ফেরিতে গীত গানটি রচনা করেন। গানটির লাইন ছিল ‘মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল ভাষা বাঁচাবার তরে, আজকে স্মরিও তারে... ’। ১৯৫৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে লেখা হয়েছিল গানটি।

প্রথম লিফলেট : একুশে ফেব্রুয়ারি রক্তাক্ত ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় একটা কিছু করার তাগিদে ওই দিনই সন্ধ্যায় আলাউদ্দিন আল আজাদ, মুস্তফা নূরউল ইসলাম, ফজলে লোহানী, হাসান হাফিজুর রহমান পাটুয়াটুলির সওগাত অফিসের বিপরীত গলিতে অবস্থিত পাইওনিয়ার প্রেসে যান। দুটি টেবিলে বসে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে তারা লিখে ফেলেন কয়েকটি প্রবন্ধ। তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি হয়ে যায় একটি বুলেটিন। ‘বিপ্লবের কোদাল দিয়ে আমরা অত্যাচারী, শাসকগোষ্ঠীর কবর রচনা করব।’ বুলেটিনে লিখেছিলেন আলাউদ্দিন আল আজাদ।

প্রথম নাটক : একুশের প্রথম নাটক মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’। ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকার অপরাধে ৫২ সালে জেলে আটক ছিলেন রণেশ দাশগুপ্ত ও মুনীর চৌধুরীসহ অনেক লেখক-সাংবাদিক। রণেশ দাশগুপ্ত অন্য সেলে আটক মুনীর চৌধুরীকে ভাষা আন্দোলনের ওপর একটি নাটক লিখে দেওয়ার অনুরোধ করে একটি চিরকুট পাঠান। শহীদ দিবসে রাজবন্দিরাই নাটকটি মঞ্চস্থ করবে, জেলে মঞ্চসজ্জা ও আলোর ব্যবস্থা করা যাবে না। তাই মুনীর চৌধুরীকে বলা হয়, নাটকটি এমনভাবে লিখতে হবে, যাতে খুব সহজে জেলেই এটি অভিনয় করা যায়। মুনীর চৌধুরী ’৫৩ সালের ১৭ জানুয়ারি নাটকটি লিখে শেষ করেন। ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি, রাত ১০টায় জেলকক্ষগুলোর বাতি নিভিয়ে দেওয়ার পর হ্যারিকেনের আলো-আঁধারিতে মঞ্চস্থ হয় কবর। অভিনয়ে অংশ নেন বন্দি নলিনী দাস, অজয় রায় প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close