নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

রিজার্ভ চুরির মামলা নিষ্পত্তি হবে ৩ বছরে

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনা ও ক্ষতিপূরণে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা মামলা নিষ্পত্তিতে তিন বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আজমাউল হোসেন কিউসি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের দায়ের করা মামলা তিন বছরের মধ্যে সমাধান হবে। তবে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এ সময় কমতে বা বাড়তে পারেও বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনতে মামলাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান।

গতকাল বিকেলে রিজার্ভ চুরির মামলার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, বিএফআইইউর পরামর্শক দেবপ্রসাদ দেবনাথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। আইনজীবী আজমাউল হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের (ফেড) সঙ্গে মামলার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। তারা মামলার জন্য বিভিন্ন নথি, তথ্য সরবারহসহ সাক্ষী দেবে। ১০৩ পৃষ্ঠার মামলায় বাদী ১৫ জন। এখানে আটটি প্রতিষ্ঠানসহ ২৫ জন অজ্ঞাতনামা লোককে বিবাদী করা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ সময় গত শুক্রবার ভোরে রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনা, ক্ষতিপূরণের দাবিতে দোষীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করেছে বাংলাদেশ বাংক।

সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেন, মামলার বিষয়ে একটি টিম কাজ করছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ল’ ফার্মের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। তাদের ঘণ্টা হিসাবে অর্থ পরিশোধ করা হবে। তবে ঘণ্টায় কত টাকা পরিশোধ করতে হবে তা জানাননি তিনি। পরে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত রিজার্ভ চুরি মামলা করতে গিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে।

রিজার্ভ উদ্ধারে চুরি হওয়া অর্থের চেয়ে বেশি খরচ হবে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে রাজি হাসান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে মামলা করা হয়েছে। এখানে খরচ মুখ্য বিষয়। আমাদের লক্ষ্য চুরি হওয়া পুরো অর্থ ফেরত আনা।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। সুইফটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হ্যাক্টড করে পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এ অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত আসে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এখনো ফেরত আসেনি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। ওই চুরির ঘটনায় সম্প্রতি আরসিবিসির শাখা ব্যবস্থাপককে কারাদন্ড ও জরিমানা করেছেন ফিলিপাইনের আদালত।

হ্যাকাররা প্রায় ১০০ কোটি ডলার চুরি করার ষড়যন্ত্র করেছিল। তবে তারা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করতে সমর্থ হয়। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কার একটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। তবে বানান ভুলের কারণে শ্রীলঙ্কার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা অর্থ ফেরত আসে। ২০১৬ সালের আগস্টে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক চুরির অর্থ স্থানান্তর বন্ধে ব্যর্থতার কারণে আরসিবিসি ব্যাংককে রেকর্ড পরিমাণ ১৯ মিলিয়ন ডলার বা ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানা করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close