আদালত প্রতিবেদক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯

বনখেকো ওসমান গণির দন্ড সর্বোচ্চ আদালতেও বহাল

দুর্নীতির অভিযোগে বহুল আলোচিত সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ওসমান গণিকে দেওয়া ১২ বছরের কারাদন্ডের রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বিচারপতি ইমান আলীর নেতৃত্বে তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাকরিচ্যুত সাবেক এ সরকারি কর্মকর্তার লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। আপিলে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মো. খুরশীদ আলম খান। ওসমান গণির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।

খুরশীদ আলম খান গণমাধ্যমকে বলেন, আসামি ওসমান গণির করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে আগের সাজার রায়ই বহাল থাকল।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন জানান, বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা খেটে অনেক আগেই বেরিয়ে গেছেন ওসমান গণি।

২০০৭ সাল থেকে কারাগারে কাটানো ওসমান গণি ভালো আচরণের কারণে দন্ড রেয়াত পেয়ে ২০১৬ সালে মুক্তি পান। বিগত সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মধ্যে ২০০৭ সালের ২৯ মে ওসমান গণির উত্তরার বাসায় অভিযান চালিয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ৯৯ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা, ১ হাজার ৩০০ ডলার, ৩ হাজার মালয়েশিয়ান মুদ্রা ও প্রচুর স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে।

গণির বিছানার তোশক, বালিশ, চালের ড্রাম, স্টোররুমে রাখা ট্রাঙ্ক ও স্টিল আলমারির চোরাকুঠুরিতে এসব মুদ্রা পাওয়া যায়। স্বর্ণালংকারগুলো পাওয়া যায় স্টোররুমে স্তূপ করে রাখা খবরের কাগজের আড়ালে।

ঘটনাটি সে সময় সারা দেশে আলোড়ন তোলে। লোকের মুখে ওসমান গণি হয়ে যান ‘বনের রাজা’ বা ‘বনখেকো’।

ওই বছর ২৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী রাজধানীর উত্তরা থানায় এ মামলা করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওসমান গণি তার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৪ টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এছাড়া কমিশনে দাখিল করা সম্পত্তির হিসাব বিবরণীতে ১ কোটি ২ লাখ ৫৩ হাজার টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপন করেছেন।

জরুরি অবস্থার মধ্যে ওই বছরই দুদক এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ৫ জুন রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক এ কে এম আরিফুর রহমান।

দুর্নীতির দায়ে গণিকে ১২ বছরের কারাদন্ডের পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ড দেন বিচারক। আর স্বামীকে দুর্নীতিতে সহযোগিতা করার দায়ে ওসমান গণির স্ত্রী মহসিন আরা গণিকে তিন বছরের কারাদন্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে গণি হাইকোর্টে আপিল করলে বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা খারিজ করে দেন। ফলে গণির সাজার রায়ই বহাল থাকে।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের আবেদন) করেছিলেন ওসমান গণি। কিন্তু গতকাল তার সেই আবেদনও খারিজ হয়ে গেল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close