নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জানুয়ারি, ২০১৯

নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

জনপ্রত্যাশা পূরণই লক্ষ্য চাই সততা ও নিষ্ঠা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সকাল ১০টায় এ বৈঠক শুরু হয়। প্রথম দিনের কার্যসূচিতে আলোচনার জন্য ছয়টি বিষয় রাখা হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ৭ জানুয়ারি চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজিয়েছেন তিনি। বৈঠকের শুরুতে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের প্রত্যাশা রয়েছে আমাদের প্রতি, কাজেই সেই প্রত্যাশা পূরণ করা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে আকাক্সক্ষা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছিলÑ সেই আকাক্সক্ষা পূরণ করব। একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আপনারা নিশ্চয়ই পড়েছেন, আমার দাদা তাকে যে কথাটা বলেছিলেন; যে কাজই কর না কেন, সিনসিয়ারিটি অব পারপাস অ্যান্ড অনেস্টি অব পারপাস। আমি মনে করি এ দুটি কথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মন্ত্রিপরিষদ এ কথাটি মনে রেখে যে কাজই করবে, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করবে। প্রতিটি কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করতে হবেÑ এ কথাটি মনে রাখতে হবে। জনগণের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ব, কর্তব্য রয়েছেÑ সেটা পালন করতেই আমরা এখানে এসেছি।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক : বৈঠকের শুরুতে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আশরাফকে ছোটবেলা থেকেই আমি চিনি। কামালের (বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। ছাত্রলীগ করত। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রবাসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করা এবং পরে দেশে এসে সৈয়দ আশরাফের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রতিবন্ধী কোটা বহাল : এদিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা তুলে দিলেও আইনানুযায়ী প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

প্রতিবন্ধীবিষয়ক জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনার খসড়া অনুমোদনের বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে একজন সাংবাদিক জানতে চানÑ প্রতিবন্ধীদের জন্য করা আইনে কোটা রাখার বিধান রয়েছে। কিন্তু আপনার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সব ধরনের কোটা বাতিলের সুপারিশ করেছে। কোটা বাতিল হওয়ায় বঞ্চিত হচ্ছে বলে প্রতিবন্ধীরা আন্দোলন করছেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়নি। তবে আপনাদের জানার জন্য বলি, আইনে যে প্রভিশন আছে ওটা কিন্তু কার্টেল (বাদ দেওয়া) হয়নি। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডার (প্রশাসনিক আদেশ) দিয়ে আইন কখনও সুপারসিড হয় না। যা ছিল, তাই আছে।

প্রতিবন্ধীবিষয়ক জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনা অনুমোদন : প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা-২০১৫ এর আলোকে প্রতিবন্ধীবিষয়ক জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনার খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন বা বিধিমালার আলোকে সেই ব্যাপারে গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। প্রবেশগম্যতা বা অ্যাক্সেসিবিলিটি, অর্থাৎ প্রতিবন্ধীরা চলাফেলার ক্ষেত্রে কোন জায়গায় কীভাবে যাবেন সেটা নিয়ে অনেকগুলো বিষয় রাখা আছে।

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন : একাদশ জাতীয় সংসদের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেবেন, তার খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে বছরের শুরুতে যে সংসদ বসে সেটাতে এবং সরকার গঠনের পর প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেবেন। সেটা মন্ত্রিসভা ঠিক করে দেয় এবং তিনি চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে সেটা সংসদে পাঠ করা হয়।

শফিউল জানান, মূল ভাষণে ৭৫ হাজার শব্দ থাকছে। সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রায় ৬ হাজার শব্দ রাখা হয়েছে। বড় ভাষণটি টেবিলে দেওয়া থাকবে। মূল ভাষণের একটি ইংরেজি সংস্করণও তৈরি করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close