নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ জানুয়ারি, ২০১৯

পছন্দের এপিএসই পাবেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা নিজেদের পছন্দে একান্ত সচিব (পিএস) না পেলেও পছন্দের ব্যক্তিকে সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পছন্দ অনুযায়ী তাদের একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ দিত সরকার। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেই ঠিক করে দেওয়া হয়েছে কোন মন্ত্রীর পিএস হবেন কোন কর্মকর্তা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার দুটি আদেশে উপসচিব পদমর্যাদার ৪৫ জন এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পিএস নিয়োগ দিয়ে ওই আদেশ জারি করে।

পিএস পদে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে নিয়োগ দেওয়া হলেও এপিএস হিসেবে নিজেদের পছন্দে যে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। শুধু খেয়াল রাখতে হয়, এপিএস যিনি হচ্ছেন, তার যেন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার পদে আবেদন করার ন্যূনতম যোগ্যতা থাকে।

এবার মন্ত্রণালয় থেকে পিএস ঠিক করে দেওয়ায় এপিএস পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের পছন্দ গুরুত্ব পাবে না বলে গুঞ্জন চলছিল গত কয়েক দিন ধরে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথের পর কয়েক দিন পার হয়ে গেলেও স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছিল না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সংশয় কাটিয়ে নতুন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পিএস মন্ত্রণালয় ঠিক করে দিলেও এপিএস নিয়োগে আগের রেওয়াজই বহাল থাকবে। ‘মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা পছন্দের ব্যক্তিকে এপিএস হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে এখন থেকে পিএস সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।’

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফরহাদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সময়ের প্রয়োজনে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে অত্যন্ত যাচাই-বাছাই করে সৎ, যোগ্য এবং পরীক্ষিত কর্মকর্তাদের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’

সাধারণত প্রশাসনের উপসচিব মর্যাদার কর্মকর্তাদের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর পিএস হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেক সময় এ কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেলেও মন্ত্রীরা তাদের নিজের সঙ্গে রেখে দেন। তবে এবার সরকার মন্ত্রিসভার সদস্যদের পিএস ঠিক করে দেওয়ায় নতুন সরকারে আসা পুরনো মন্ত্রীরা তাদের আগের পিএসকে আর রাখতে পারছেন না।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার সরকারের পক্ষ থেকেই পিএস নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী তা অনুমোদন করায় একযোগ সব মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর জন্য পিএস নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার কারণে এপিএস পদে পলিটিক্যাল অ্যাপয়েন্টমেন্ট এবার বাদ দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। আর এপিএস হিসেবে সরকারের ক্যাডার সার্ভিস বা নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়ার একটি প্রস্তাবও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব আর বাস্তবায়ন হচ্ছে না ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের হাতেই রেখেছেন। গত বুধবার মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের হুশিয়ার করে তিনি বলেছেন, কাজের ক্ষেত্রে যেন কোনো গাফিলতি না হয় সেজন্য নজর রাখবেন তিনি। এ প্রসঙ্গ টেনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যে প্রধানমন্ত্রীর নজরদারিতে থাকবেন তা এবার পিএস নিয়োগ দেওয়ার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close