মিয়ানমারে একটি বৌদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষ উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন ছেড়ে পালিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই বৌদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে নিরাপত্তা সদস্যদের সংঘর্ষ চলছে। এতে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে শত শত হাজার মানুষ। ২০১৭ সালে ওই একই অঞ্চলে সেনাবাহিনীর অভিযানে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন করে সেখানে উত্তেজনা বেড়েই গেছে। খবর আল জাজিরার।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক গত বুধবার বলেন, ডিসেম্বরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। গত মাসেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চার মাসের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট ইন মিয়ানমারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বুথিডংয়ের একটি গ্রামে অন্তত ৩০ জন ব্যক্তি ছোট-বড় অস্ত্র নিয়ে সীমান্তরক্ষী পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলা করলে এক পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিনে থু খা পুলিশের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে তাদের যোদ্ধাদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি এ ব্যাপারে।

গত মাসে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে চার মাসের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। যদিও সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপকে ওই অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের জন্য এক বিরল পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়, তারপরও এ যুদ্ধবিরতি থেকে রাখাইন রাজ্যকে বাদ দেওয়ায় এ পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আধিপত্য রয়েছে। ফলে দেশটির সেনাবাহিনী চায় না তাদের অনুপস্থিতিতে আরাকান আর্মি রাখাইনের ওপর আধিপত্য বিস্তার করুক। কারণ আরাকান আর্মি বরাবরই অঞ্চলটি স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানিয়ে আসছে। এ অবস্থায় ওই অঞ্চল সেনাবাহিনীর হাতছাড়া হয়ে গেলে সুবিধা নেবে আরাকান আর্মি। এছাড়া অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী হলেও রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) ভয় তো রয়েছেই। ফলে রাখাইন রাজ্যকে যুদ্ধবিরতির বাইরে রাখতে চায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

"