নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ জানুয়ারি, ২০১৯

ইসিতেই স্মারকলিপি

নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃভোট চায় ঐক্যফ্রন্ট

বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, ভোট জালিয়াতি, প্রশাসনকে অপব্যবহারের অভিযোগ

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা, ভোট জালিয়াতি এবং সরকারি প্রশাসনকে নজিরবিহীনভাবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃভোট অনুষ্ঠানের দাবি করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ-সংক্রান্ত স্মারকলিপি জমা দেন ফ্রন্টের নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

সাক্ষাৎ শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফ্রন্টের দাবির বিষয়গুলো সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে উপহাস করেছে মন্তব্য করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই মুখপাত্র বলেন, নির্বাচনের নামে জাতির সঙ্গে নজিরবিহীন ঠাট্টা করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মাঠপর্যায়ের কোনো স্তরেই নিয়ন্ত্রণ ছিল না নির্বাচন কমিশনের, তা একজন কমিশনাররের বক্তব্যেও প্রমাণিত হয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আবার বঞ্চিত করার দায় নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে। তিনি বলেন, মজার বিষয় হচ্ছেÑ ব্যালট পেপারের মুড়িতে ভোটারের সই লাগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নেই। প্রতারণা, জালিয়াতির মাধ্যমে ভোট গ্রহণের দায় ইসিকেই বহন করতে হবে। কেননা, নির্বাচনের আগের রাতেই ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট কেটে ব্যালট বাক্সে ভরে রাখা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নির্বাচনের আগের দিন ও রাতে পোলিং এজেন্ট এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নানারকম হুমকি দেওয়া হয়, গ্রেফতার করা হয়। তাদের এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে ভোটকেন্দ্রে এলেও এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। প্রায় সব কেন্দ্রেই দুপুরের মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যায়। এরপর মধ্যাহ্নবিরতির নামে ভোটকেন্দ্রের মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। নজিরবিহীনভাবে বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। কোনো কোনো কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভোটও কাস্ট হয়, যা নজিরবিহীন।

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দেখানোর জন্য নিজেদের লোক লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে নিয়োগ দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের পদধারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের। সারা দেশে জালভোটের মহা-উৎসব চললেও কোথাও একজন জাল ভোটদাতাকেও গ্রেফতার করা হয়নি। এই নির্বাচনে জাতিকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এজন্যই প্রত্যাখ্যান করেছি। একই সঙ্গে পুনর্নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভেটিং করা হয়নি, দলীয় মনোনয়নে বাধা দেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাছাই ও আপিলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা, গ্রেফতার ও নজিরবিহীন নির্যাতন, অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, প্রচার কাজে বাধা দেওয়া, প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল না করা, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণসহ সশস্ত্র বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close