নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

ভুলভ্রান্তি থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখুন : শেখ হাসিনা

এক দশকে সরকার পরিচালনায় কোনো ভুল হয়ে থাকলে তা ‘ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে’ দেখার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আবার নৌকাকে বিজয়ী করলে আরো ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি’ এনে দেব, এটাই আমার নির্বাচনী ওয়াদা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে এই প্রতিশ্রুতি দেন গত ১০ বছর বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসা এই রাজনীতিবিদ। ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই ইশতেহারে আওয়ামী লীগের দলীয় অবস্থান, গত দুই মেয়াদে সরকারের সাফল্য এবং আগামী দিনের লক্ষ্য ও পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ৮০ পৃষ্ঠার ইশতেহারের সংক্ষিপ্ত সার অনুষ্ঠানে পড়ে শুনিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কাজ করতে গিয়ে আমার বা আমার সহকর্মীদেরও ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। নিজের ও দলের পক্ষ থেকে আমাদের যদি কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে সেগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য দেশবাসী আপনাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।

ভোটারদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরো সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করব। জাতির পিতার কাক্সিক্ষত ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব। টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগ ‘টেকসই বিনিয়োগ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন’ নিশ্চিত করতে কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ‘কথা নয় কাজে’ বিশ্বাস করে।

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করতে অনুষ্ঠানের মঞ্চে এসে শেখ হাসিনা প্রথমেই স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশকে।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখ নির্যাতিত নারী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদেরও তিনি স্মরণ করেন।

ইশতেহার ঘোষণা শেষে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে বাংলাদেশ।

বাঙালি জাতির এই দুই মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামী লীগই পারবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে দিতে, পারবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে। গৌরবের এই সময়কালে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলে তা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ‘গ্লানিকর’ হবে বলেও মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধুর মেয়ে শেখ হাসিনা।

জনগণ ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ব্যালট বিপ্লবের’ মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতাসীন করবে বলে আশা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা মার্কায় বিজয় অর্জন করবে, এ বিশ্বাস আমাদের আছে। বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।

সকাল ১০টায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রকাশের অনুষ্ঠান। শুরুতেই আওয়ামী লীগের শাসনমালের উন্নয়ন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য আবদুর রাজ্জাকের স্বাগত বক্তব্যের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তারপর মঞ্চে এসে ইশতেহার ঘোষণা শুরু করেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা ছাড়াও কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close