চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২১ নভেম্বর, ২০১৮

কাল শুরু চট্টগ্রাম টেস্ট

বাংলাদেশের সামনে উইন্ডিজ চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ সফরের শুরুতেই আচমকা একটা ধাক্কা খেতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রধান কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্টুয়ার্ট ল। অথচ বাংলাদেশ সফর শেষ করেই ইস্তফা দেওয়ার কথা ছিল তার। টাইগারদের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ক্যারিবীয়দের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস।

দায়িত্ব নিয়েই জানিয়ে দিলেন চ্যালেঞ্জের কথা। তার চ্যালেঞ্জ শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে; চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে। সিরিজটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ দলও। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ফিরলেও ওপেনার তামিম ইকবাল নেই কাল থেকে শুরু হওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। তামিমের চোট শঙ্কার কারণে খুলে গেছে সাদমান ইসলামের স্বপ্নের দুয়ার। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করার পুরস্কারটা হাতেনাতেই পেলেন এই তরুণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের জার্সিতে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সাদমান। তার ওপর অগাধ আস্থা আছে নির্বাচকদের। তাদেরই একজন হাবিবুল বাশার সাদমান প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘যেভাবে খেলেছে সে, সেটা আমাদের মনে ধরেছে। আমরা ওকে নিয়ে আশাবাদী।’

ভারত সফরটা খুব একটা সুখের কাটেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তার ওপর সরে দাঁড়িয়েছেন প্রধান কোচ ল। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত কোচ পোথাস। বলেছেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়া দারুণ সম্মানের। বাংলাদেশ সিরিজ খুব চ্যালেঞ্জিং হবে। আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি।’

সাকিবের অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দায়িত্ব পালন করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টাইগারদের জন্য স্বস্তির খবর- বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ফিট হয়ে ফেরাটা। ঠিক উল্টো চিত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজে। তাদের নিয়মিত অধিনায়ক জেসন হোল্ডার নেই এই সিরিজে। তার পরিবর্তিত হিসেবে ক্যারিবীয়দের নেতৃত্বের জোয়াল থাকবে কার্লোস ব্রাথওয়েটের কাঁধে।

ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কও সাকিবদের কাছ থেকে চ্যালেঞ্জ আশা করছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভারত সফর করে এসেছি। কন্ডিশন প্রায় একই, উইকেটেও তেমন পার্থক্য নেই। তবে এখানে চ্যালেঞ্জ থাকাই স্বাভাবিক। আমাদের জন্য কাজটা মোটেও সহজ হবে না। ওরা ঘরের মাঠে খুব ভালো। কিন্তু আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

গত দুই বছরে নিজেদের মাটিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এ বছর সেই ঘরের মাঠেই শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভালো করতে পারেনি দল। জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষেও সিরিজ বাঁচানোর জন্য হিমশিম খেতে হয়েছিল টাইগারদের। সিলেটে প্রথম টেস্টে উইকেটই বুঝতে পারেনি স্বাগতিক শিবির।

ঢাকা টেস্টে অবশ্য উইকেট থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন স্পিনাররা। তাইজুল ইসলাম দুই টেস্টে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। সিরিজ সেরা তাইজুলকে অপরপ্রান্তে সঙ্গ দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ হয়েছেন ঢাকা টেস্টের খেলোয়াড়। চট্টগ্রামের সম্ভাব্য স্পিন সহায়ক উইকেটে সাকিবের অন্তর্ভুক্তি বোলিং ইউনিটকে আলাদা শক্তি জোগাচ্ছে। মুস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদের গড়া পেস বিভাগও আশা জাগানিয়া।

কিন্তু বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ টপ অর্ডার। আরেকটু ছোট করে বললে ওপেনারদের ব্যাটে রানখরা। ইমরুল কায়েস ও লিটন দাশের ব্যাট হাসছে না টেস্ট ক্রিকেটে। এর মধ্যে সৌম্য সরকারকে ফেরানো হয়েছে দলে। চমক হিসেবে ২৩ বছর বয়সী সাদামানকেও দলে ঢুকিয়েছেন নির্বাচকরা। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ কেমন হয় সেটা কার্যত বলা মুশকিল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে যোজন-যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিক অতীত বলছে ভিন্ন কথা। এ পর্যন্ত ১৪ বারের সাক্ষাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুবার হারিয়েছে। ১০ ম্যাচে হারা টাইগাররা ড্র করেছে দুটিতে। এই বাংলাদেশ অবশ্য ড্রয়েও তৃপ্ত নয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১-১ ব্যবধানে ড্র করা টাইগারদের চোখ সিরিজ জয়ে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close