বগুড়া প্রতিনিধি

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৮

কলেজছাত্রকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা

ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৫

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে নাইম হোসেন (২০) নামে এক কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সারিয়াকান্দি বাজারের দক্ষিণপূর্ব পাশে দুটি বাড়ির মাঝের খোলা স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে পুলিশ স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা এবং দুই সহপাঠীসহ ৫ জনকে আটক করেছে। আটকরা হলো বাড়ইপাড়া গ্রামের কান্টু মোল্লার ছেলে ও পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম অনন্ত শ্রাবণ ওরফে বিষু (২০), ধুনট উপজেলার গোলাইর তাইড় গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মনির হোসেন (২০), ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের সাহাদৎ হোসেনের ছেলে বাবু মিয়া (১৯), বাড়ইপাড়া গ্রামের বেলাল উদ্দিনের ছেলে আতিকুর রহমান (১৮) ও সাব্বির হোসেন (১৮)।

নিহত নাইম হোসেন জেলার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের মরিয়া গ্রামের ইনতেজার সোনারের ছেলে।

সে বগুড়া শহরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (বিট) টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল। পুলিশ এই হত্যাকা-ের কোনো ক্লু এখনো উদ্ধার করতে পারেনি।

এ ঘটনায় আটকরা হলো ছাত্রলীগগের সারিয়াকান্দি পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত শ্রাবণ বিশু, বাবু মিয়া, আতিকুর রহমান, মনির হোসেন ও সাব্বির হোসেন। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

পুলিশের সারিয়াকান্দি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সহপাঠী ও বন্ধুদের সঙ্গে বিরোধের জেরে এ হত্যাকা- ঘটে থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার রাতের কোনো একসময় অন্য জায়গায় হত্যার পর ঘটনাস্থলে (যেখান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে) লাশ ফেলে রাখা হয়। শুক্রবার সকালে মা নাজমা বেগম সারিয়াকান্দি থানায় গিয়ে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।

নাজমা বেগম জানান, বৃস্পতিবার সকালে বাড়িতে নাশতা করার সময় নাইমের এক বন্ধু মোবাইল ফোনে কল করে। ওই কল পেয়ে নাইম নাশতা শেষ না করেই মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে যায়। রাতে বাড়ি না ফেরায় তিনি নাইমের মোবাইলে কল করেন। কিন্তু কল হলেও কেউ তা রিসিভ করেনি। গভীর রাতে কয়েকজন বন্ধু নাঈমের মায়ের সঙ্গে দেখা করে। এ সময় তারা মাকে আশস্ত করে বলেন, আপনার ছেলে সারিয়াকান্দিতে আছে, সকালে বাড়ি ফেরবে, টাকা দেন ওকে আমরা খোঁজাখুঁজি করি।

একসময় নাইমের মোবাইল ফোন থেকে একটি মেসেজ পাঠানো হয়। তাতে লেখা ছিল ‘সকালে বাড়ি যাব।’ এর কিছুক্ষণ পর ‘তোর ছেলেকে যদি পেতে চাস তাহলে সোনামুখী আয়’ বলে আরো একটি মেসেজ পাঠানো হয়। এরপর থেকে নাইমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, থানায় ছেলের লাশ শনাক্তের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন নাইমের তিন বন্ধুই তাকে হত্যা করেছে। সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কুমার পাল ধারণা করছেন, অন্য কোথাও হত্যার পর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে লাশটি ওই স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে। সারিয়াকান্দি থানার ওসি আল আমিন জানান, লাশটি উদ্ধার করে থানায় আনার পর নাজমা বেগম নামে এক মহিলা সেটি তার ছেলে নাইমের লাশ বলে শনাক্ত করেন।

আটকদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা অসংলগ্ন কথা বলছে। আমরা তাদের তথ্যগুলো খতিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close