নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৬ নভেম্বর, ২০১৮

৪০তম বিসিএসে আবেদনের রেকর্ড

৪০তম বিসিএসে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী আবেদন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এই বিসিএসে আবেদনের শেষ দিন ছিল। পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নেছার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ৩ লাখ ৮৯ হাজর ৫৩৩ জন প্রার্থী ফি জমা দিয়ে আবেদন করেছেন। ফি দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন নিবন্ধন করা আরো ৭৮ হাজার। অর্থাৎ এবার মোট আবেদনকারীর সংখ্যা সাড়ে ৪ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

পিএসসি সূত্র জানায়, এর আগে ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী আবেদন করেন। সেটাই ছিল বিসিএস পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি আবেদনের রেকর্ড। ৩৭তম বিসিএসে অংশ নেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন পরীক্ষার্থী।

গত ১১ সেপ্টেম্বর ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। ৪০তম বিসিএসের আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে। এবারের পরীক্ষার মাধ্যমে ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ক্যাডার অনুসারে প্রশাসনে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

আবেদনকারীর সংখ্যা এত বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সরকারি চাকরির প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আস্থা বাড়ার কারণে এবার যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বিসিএসে আবেদন বাড়ার কারণ, দেশে শিক্ষিত তরুণের হার বেড়েছে। দেশে সরকার এখনো একক ও বৃহত্তম চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান। সরকারি চাকরিতে বেতন বেড়েছে বলে প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে, এটি একটি কারণ। তার মতে, আরেকটি কারণ হচ্ছে, বেসরকারি ভালো চাকরি সীমিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কথায়, ‘আগে সরকারি চাকরিতে কম বেতন ছিল বলে অনেকে ব্যাংকের চাকরিতে যেত। কিন্তু এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে।’

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমি দেখেছি বিসিএসে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক আগ্রহী হচ্ছে। এজন্য ভোরে আমাদের লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসছে। বাসে বসে বসে তারা বিসিএসের পড়া পড়ছেন। তা ছাড়া বর্তমানে সেশনজট কমে গেছে। এক শিক্ষার্থী একাধিকবার আবেদন করতে পারছেন, এটাও একটা কারণ হতে পারে।’

মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ ও করপোরেট কোচের মুখ্য পরামর্শক যীশু তরফদার মনে করেন, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নতুন বেতন স্কেলের কারণে অনেকেরই আগ্রহ বেড়েছে। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি বেসরকারি চাকরির থেকে অনেক ভালো ও সম্মানের বলে মনে করা হয়। সরকারি চাকরিতে চাকরির নিশ্চয়তা বেশি। এই চাকরির আর্থসামাজিক গুরুত্ব অন্য চাকরি থেকে বেশি।

যীশু তরফদার উদাহরণ দিয়ে বলেন, দুই বন্ধুর একজন সরকারি চাকরি করেন। আরেকজন করেন বেসরকারি চাকরি। দুজন গ্রামে গেলে সরকারি চাকরিজীবী বন্ধু তুলনামূলক বেশি সম্মান পান। এ থেকে বোঝা যায়, দেশে সরকারি চাকরির গুরুত্ব কিছুটা হলেও বেশি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close