নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ নভেম্বর, ২০১৮

বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষ পুলিশের গাড়িতে আগুন

মনোনয়নপত্র সংগ্রহের তৃতীয় দিনে গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে ১০-১২ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি। পুলিশের পক্ষ থেকেও কয়েকজন আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিএনপির মহাসচিব এ হামলাকে সরকারের পরিকল্পিত চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাকর্মী-সমর্থকদের ভিড় ছিল। বেলা পৌনে ১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বড় একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা-৮ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন। ওই সময় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা থেকে তার কর্মী-সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে কর্মী-সমর্থকরা সরে না যাওয়ায় একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয় এবং ধাওয়া পাল্টা- ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় কয়েকজন আহত হন। মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ প্যালেট বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় পুলিশ সেখান থেকে পিছু হটে। একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। তারা রাস্তায় চলাচলকারী অন্যান্য ব্যক্তিগত গাড়িও ভাঙচুর করে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্যালেট বুলেটে আহতরা হলেন পিরোজপুরের নেছারাবাদের মো. শামসুল হক, রাজধানীর মুগদার মেহেদি হাসান মিরাজ, অরিন, পল্টনের মো. কাদির, হৃদয় শেখ, মতিঝিলের মকবুল হোসেন, সবুজবাগের মনির হোসেন, খিলগাঁওয়ের মোস্তাক, কলাবাগানের সুমন, বিমানবন্দর থানা এলাকার মহিউদ্দিন রতন, মাদারীপুরের সাখাওয়াত হোসেন এবং পিরোজপুরের আসাদুজ্জামান।

ঘটনার বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিনা উসকানিতে মনোনয়ন ফরম নিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা করেছে সরকার। অন্যদিকে বিনা উসকানিতে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার ডিসি আনোয়ার হোসেন।

এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় শোডাউন করা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে এমনটি না করতে সতর্ক করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির আদেশে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়নপত্র গ্রহণ বা জমা দেওয়ার সময় মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনসহকারে মিছিল ও শোডাউন করা হচ্ছে, যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর ৮ নম্বর বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসির এ আদেশ আসার পরদিনই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এদিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সংঘর্ষের ঘটনাকে ‘চক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, এই সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সরকার নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে নমিনেশন নেওয়ার জন্য তাদের লোকজন ভিড় করেছে, তখন পুলিশ কিছু করেনি। উসকানি দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কালকে (মঙ্গলবার) হঠাৎ করে চিঠি দিল। এই চিঠি দিয়ে আজকে পুলিশের অ্যাকশন। উসকানি দিয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close