আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৩ নভেম্বর, ২০১৮

পাঁচ বাঙালি খুনে উত্তপ্ত আসাম

দোষীদের শাস্তি চেয়েছেন মমতা * দিল্লিতেও প্রতিবাদ

ভারতের আসামে পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে গোটা রাজ্য। আসাম বাঙালি ছাত্র যুব ফেডারেশন ও আরো কয়েকটি সংগঠনের ডাকে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে তিনসুকিয়ায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘট চলে। রাস্তায় যানবাহন ছিল হাতেগোনা। দোকানপাটও খোলেনি। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজারের।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আসামের তিনসুকিয়ায় পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। অসম-অরুণাচল সীমানা বরাবর ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে জঙ্গিবিরোধী অভিযান। মিয়ানমার সীমান্তে চলে কড়া নজরদারি। তদন্তে নেমে উলফার দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গেও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শোক জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এক টুইট বার্তায় দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি চেয়েছেন। মমতা টুইটে লেখেন, ‘আসাম থেকে ভয়াবহ খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুঃখ প্রকাশের ভাষা নেই। এই ঘটনা কি এনআরসির ফলশ্রুতিতে ঘটেছে? অপরাধীদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেফতার করতে হবে। হত্যাকা-ের প্রতিবাদে কলকাতায় মিছিল করবে তৃণমূল। মিছিল হবে শিলিগুড়িতেও।’

কয়েক মাস আগে আসামে নাগরিক পঞ্জিকরণের চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পরও প্রতিবাদ করেছিলেন মমতা। তার মনে হয়েছিল নিজের দেশেই নাগরিকদের উদ্বাস্তু করে দিয়েছে মোদি সরকার। তার প্রতিবাদ গিয়ে পৌঁছেছে দিল্লিতেও। পাল্টা তাকেই রাজনৈতিক আক্রমণের নিশানা করেছে বিজেপি।

শুধু তাই নয়, মমতার বিরুদ্ধে ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করার অভিযোগও এনেছেন বিজেপি নেতারা। তাছাড়া ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে যে তিনটি রথযাত্র বিজেপি করছে তাতেও প্রথম সারিতে থাকবে এনআরসি প্রসঙ্গ। বিজেপির দাবি, আসামের মতো অনুপ্রবেশের সমস্যা কলকাতাতেও আছে। তাই এখানেও নাগরিক পুঞ্জিকরণ প্রয়োজন। তবে প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল।

পাঁচ বাঙালিকে হত্যার ঘটনায় ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামকে (উলফা) দায়ী করছে স্থানীয় সংগঠনগুলো। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী সন্ত্রাসীরা উলফার পরেশ বরুয়া গ্রুপের।

পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখে কালো কাপড় বাঁধা সশস্ত্র ৫-৬ যুবক বাঙালি অধ্যুষিত তিনসুকিয়ার খেরবাড়ি গ্রামে ঢোকে। একটি দোকানের সামনে কয়েকজন বাসিন্দা গল্প করছিলেন। বেছে বেছে কয়েকজনকে ‘আলোচনা আছে’ বলে ডেকে পার্শ্ববর্তী ভূপেন হাজরিকা সেতুর কাছে নিয়ে যায় তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকলকে জোর করে একসঙ্গে বসানোর পরেই এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যান একই পরিবারের তিন সদস্যসহ ৫ জন। ৩০০ মিটার দূরেই ছিল পুলিশ চেকপোস্ট। তবে পুলিশ আসার আগেই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি হালনাগাদ করা এবং নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন করে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরও যেসব বাংলাভাষী আসামে প্রবেশ করেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ইস্যুতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সেখানে উত্তেজনা চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close