প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০২ নভেম্বর, ২০১৮

বখাটের হুমকিতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা : দুই গৃহবধূর লাশ

সোনারগাঁয়ে বখাটের প্রাণনাশের হুমকিতে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া বগুড়ার ধুনটে ঝুলন্ত অবস্থায় ও চট্টগ্রামে গলকাটা অবস্থায় দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট :

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) : বখাটের প্রাণনাশের হুমকিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারাগাঁ উপজেলার নানাখী গুলনগর এলাকায় গত বুধবার রাতে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আঁখি আক্তার নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। আঁখি আক্তার উপজেলার পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনার প্রতিবাদে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী গতকাল বৃহ¯পতিবার দুপুরে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে পুলিশ এসে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের নানাখী গুলনগর এলাকার শাজাহানের মেয়ে আঁখি আক্তার গত ৭ মাস যাবৎ স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে একই এলাকার মনির হোসেনের ছেলে বখাটে সাকিব প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। গত ৮ অক্টোবর আঁখি আক্তার স্কুলে যাওয়ার পথে বখাটে সাকিব তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে আঁখির গতিরোধ করে তার প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে সাড়া না দেওয়ায় কিল ঘুষি লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এ সময় আঁখির ডান গাল কেটে রক্ত বের হয়। এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আহত ছাত্রীর সহপাঠী ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীর পরিবার স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর সোনারগাঁ থানা পুলিশের সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর ইসলাম ইভটিজিংয়ের অভিযোগে বখাটে সাকিবকে আটক করে ১৫ দিনের কারাদ- দেন। বখাটে সাকিব কারাদ- শেষে ছাড়া পেয়ে গত বুধবার রাতে মুঠোফোনে আঁখিকে অকথ্যভাষায় গালাগাল করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বখাটের এ হুমকির ভয়ে ওই স্কুলছাত্রী গত বুধবার গভীর রাতে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, আঁখি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধুনট (বগুড়া) : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সাহিদা খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শেহলিয়াবাড়ী গ্রামে শ্বশুরবাড়ির শয়নকক্ষ থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সে ওই গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী। এদিকে, ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তার বাবা আমিনুল ইসলাম।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাশিয়াহাটা গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে সাহিদা খাতুন। প্রায় ১ বছর আগে পার্শ্ববর্তী শেহলিয়াবাড়ী গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোতালেব হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাইকে যৌতুক হিসেবে ৮৫ হাজার টাকা দেন আমিনুল ইসলাম। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সাহিদা খাতুন ও মোতালেব হোসেনের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময় সাহেদা খাতুনকে নির্যাতন করে আসছিল মোতালেব। এ ছাড়া সে যৌতুক হিসেবে শ্বশুরবাড়ি থেকে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করছিল।

নিহত গৃহবধূর বাবা আমিনুল ইসলাম বলেন, জামাই মোতালেব হোসেন ও তার মা সালেহা বেগম আমার মেয়ে সাহিদা খাতুনকে হত্যা করেছে।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীতে রোখসানা আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূকে জবাই করে খুন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাকলিয়া থানার তুলাতলী আলী ভবনের একটি বাসায় এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মো. জয়নাল পলাতক রয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিহত রোখসানা বাকলিয়ায় নতুন ফিশারিঘাটে মাছ কাটেন। তার স্বামী জয়নাল পেশায় রাজমিস্ত্রী। তাদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। চট্টগ্রাম নগরের তুলাতলীতে রোখসানার বাসার পাশে তার বড় বোন স্বামীসহ থাকেন। পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে বুধবার রাত ৩টা পর্যন্ত জয়নাল ও রোখসানা ঝগড়া করেন। এরপর বোন ও ভগ্নিপতির ঝগড়া থামিয়ে দুজনকে ভাত খাইয়ে দেন তারা। পরে ঘুমাতে যান। ভোরে ঘুম থেকে উঠে বোন দেখেন, রোখসানার বাসার দরজা খোলা। ভেতরে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় রোখসানা পড়ে আছে। স্বামী নেই। দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, জয়নাল ছুরি দিয়ে তার স্ত্রীর গলা কেটে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রক্তমাখা ছোরাটি পাওয়া গেছে। জয়নালকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close