গাজী শাহনেওয়াজ

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৮

নির্বাচনের অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত

বিবেচনায় রয়েছে জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আজ সোমবার বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২২ দফা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। এ প্রস্তাবনার বাস্তবায়ন শুরু হবে আগামীকাল ১৬ অক্টোবর থেকে। প্রস্তাবে জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণা নভেম্বরে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এ কর্মপরিকল্পনা ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনাই বেশি। নির্বাচনে আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর জন্য ২৫ অক্টোবর থেকে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণে প্রস্তাব প্রস্তুত করে কমিশনকে জানাতে নির্বাচনী শাখাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এ প্রস্তাবনায়।

এদিকে, ছোট এ কর্মপরিকল্পনাতে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলীয় প্রধানদের নির্বাচনী প্রচারণা ও বক্তব্য নিয়ন্ত্রণে প্রণয়ন করা হবে নীতিমালা, যা আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জারি হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিয়ন্ত্রণ কিংবা কৌশলগত দিকনির্দেশনা নির্ধারণে আগামী ২৯ অক্টোবর সভার সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে এ প্রস্তাবনায়। সেখানে প্রচারের বিষয়ে পদ্ধতি কী হবেÑ এর জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), আইসিটি মন্ত্রণালয়-টিএন্ডটি এবং বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর প্রতিনিধির সমন্বয়ে ইসিতে সভা হবে।

নির্বাচনে বৈধ অস্ত্রের অপপ্রয়োগ যেমন হয়ে থাকে তেমনি একইভাবে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়। নির্বাচনে পেশিশক্তি ও প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করতে এসব অস্ত্রের অপব্যবহার হয়ে থাকে। সংসদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিধায় এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা ওই তারিখের মধ্যে কমিশনকে জানাতে হবে নির্বাচন সংশিষ্টদের।

নির্বাচনে ঋণ পরিশোধ না করেই অনেক ঋণখেলাপি প্রার্থী হন। তফসিল ঘোষণার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিকে পত্র দিয়ে ঋণখেলাপিদের তথ্য এনে মনোনয়নপত্র বাতিল করে তাদের প্রার্থিতায় অযোগ্যতা ঘোষণা করেন। তবে কমিশন এই স্পর্শকাতর কাজটি তফসিল ঘোষণার আগে অর্থাৎ ২২-২৫ অক্টোবরের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের কাছে আসনওয়ারি তালিকা পাঠানো হবে। এজন্য ঋণখেলাপিসহ নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন ইত্যাদি কার্যক্রম নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও যোগাযোগ সভা হবে। এছাড়া আগামীকাল ১৬ অক্টোবর প্রস্তাবনার প্রথম প্রস্তুতি হিসেবে নির্বাচনের প্রার্থীদের ব্যয় তদারকি করার জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনের জন্য একটি করে ব্যয় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারি সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে আজ চূড়ান্ত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসছে ইসি। বৈঠক থেকে ২২ দফা প্রস্তাবের অধীনে দফাওয়ারি অনুষঙ্গগুলো বাস্তবায়ন করবে নির্বাচনের বিভিন্ন উইং।

ইসির প্রস্তাবিত সংক্ষিপ্ত ২২ দফা হচ্ছে, নির্বাচনী এলাকার সীমানার জিআইএস প্রস্তুত ও মানচিত্রসহ পুস্তিকা এবং পোস্টার প্রস্তুতকরণ (৩০ অক্টোবর), সম্পূরক ভোটার তালিকার সিডি রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে সরবরাহ (২ নভেম্বর), বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের জন্য হেল্পডেস্ক স্থাপনে তথ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জননিরাপত্তা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় সভা (২০ অক্টোবর), নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ করা (২৫ অক্টোবর), উন্নয়ন অংশীদার বা অন্য কোনোভাবে প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রমের অর্থের সংস্থান ও প্রকল্প প্রণয়ন কাজ (১৭ অক্টোবর), নির্বাচনী দ্রব্যদি সামগ্রী ব্যবহার উপযোগী কাজ যেমন ভোট গ্রহণের আগেই সব ব্যালট বাক্স পুনরায় যাচাইকরণ সম্পন্ন করা (২ নভেম্বর) এবং আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কার্যক্রম যেমন ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবনা এবং সভা অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কাজ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সম্পন্ন করা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close