নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ অক্টোবর, ২০১৮

পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বি. চৌধুরী

বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জোট করব না

বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর জোট করবেন না বলে জানিয়েছেন বিকল্পধারা সভাপতি ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এ ছাড়া নিজ দলের আগের অবস্থান থেকে না সরে দুইটি স্পষ্ট দাবি জানিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসল বকিল্পধারা। দলটিকে পুনরায় ঐক্যবদ্ধ করতে চাইলে বিকল্পধারাকে ১৫০ আসন ছেড়ে দিতে হবে এবং জামায়াতের সঙ্গে যেকোনো ধরনের যোগসূত্র বিএনপিকে ত্যাগ করতে হবে। এমন ঘোষণা দিয়েই গতকাল শনিবার বারিধারার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিকল্পধারা প্রেসিডেন্ট ও যুক্তফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি এমন সময় সংবাদ সম্মেলনে আসেন যখন তার দলের পুরনো মিত্ররা বিএনপির সঙ্গে মিলে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবে।

নতুন ঘোষিত জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট থেকে বাদ পড়ে বিকল্পধারার সভাপতির নিজ বাসায় আলাদা সংবাদ সম্মেলন ডাকেন বি. চৌধুরী। সেখানে তিনি তার দলের অবস্থান ব্যাখা করতে গিয়ে বলেন, দুটি শর্ত পূরণ হলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ফিরবে বিকল্পধারা। এর একটি হলো, স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে কোনো ঐক্য হতে পারবে না। আর দ্বিতীয়টি হলো, সংসদে ভারসাম্য ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধে বিকল্পধারাকে ১৫০ আসন দিতে হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে না থাকার বিষয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, আপাতত মনে হয়েছে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতা বিরোধিরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রয়েছে। এমন প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিকল্পধারা থাকতে পারে না। তাছাড়া বিএনপিকে এককভাবে ক্ষমতায় বসানোর কোনো চক্রান্তের সঙ্গে বিকল্পধারা কোনোভাবেই যুক্ত থাকবে না। যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে কোনো ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি। আমরা ভারসাম্যের রাজনীতি চাই। কোনো একক দলের আধিপত্য চাই না। এ দুটি বিষয়ে আমরা বিএনপির সঙ্গে একমত হতে পারিনি। তাই জোটে যাওয়ার বিষয়ে আমরা নেগেটিভ চিন্তা করেছি।

তবে শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে তার বাসায় গিয়ে ফিরে এসে হতাশ হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মাহী বি চৌধুরী আগে থেকে চলা বিভিন্ন আলোচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, আজকে এসে পরিষ্কার হলো কারা ঐক্য গঠনে বিরোধী ভূমিকা রেখেছে। জোটে বাধা হিসেবে নিজের দলের বিরুদ্ধে অপ্রচার হয়েছে বলে দাবি করেন মাহী বি চৌধুরী। এ সময় তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই বিকল্প ধারা নিয়ে অনেক সমস্যা তৈরি করা হয়েছিল। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন ও রূপরেখা প্রণয়নে প্রায় অন্ধকারে রাখা হতো বিকল্পধারাকে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের প্রাথমিক ঘোষণার দিন মাত্র ৪০ মিনিট আগে বিকল্পধারার নেতাকে বলা হয়েছে। তাই মতামত নেওয়ারও কোনো সুযোগ ছিল না। দলগুলো বিভিন্ন কাজে বিকল্পধারা বয়োজেষ্ঠ নেতা বি. চৌধুরীকে অসম্মান করেছেন। তারপরও ঐক্যও স্বার্থে আমরা সবাইকে সঙ্গ দিয়ে গেছি। আজ আমাদেরকে ড. কামালের বাসায় যাওয়ার কথা বলে তারা দরজা পর্যন্ত খোলেননি। এমনটা হতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী, মাহবুব আলী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, হাফিজুর রহমান ঝান্টু, ওবায়েদুর রহমান মৃধা, আসাদুজ্জামান বাচ্চু, বি এম নিজাম প্রমুখ।

বিকল্পধারার দুই নেতা বহিষ্কার : বারিধারায় বি. চৌধুরীর বাসায় বিকল্পধারা বাংলাদেশের বৈঠকে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করায় বিকল্পধারা বাংলাদেশের সহ-সভাপতি শাহ আলম বাদলকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাদলের নেতৃত্বে বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি অংশ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগে দলটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক জানে আলম হাওলাদারকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তাদের পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। গতকাল বিকেলে বারিধারায় বি. চৌধুরীর বাসায় বিকল্পধারা বাংলাদেশের এক বৈঠকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে দলের মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান, মাহী বি চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close