আদালত প্রতিবেদক
আদালতের পর্যবেক্ষণ
রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শাহেদ নূর উদ্দীন বলেছেন, তাৎকালীন রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলা ছিল বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা। তিনি বলেন, রাজনীতি মানেই কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা শুধু আক্রমণই ছিল না, এটি ছিল একটি দলকে নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে রাজনীতে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রয়াস কেন, এটা কাম্য নয়। গতকাল বুধবার দুপুরে গ্রেনেড হামলা মামলা রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক এ কথা সব বলেন।
আদালত এ দেশে আর এমন হামলার পুনরাবৃত্তি চান নাÑ এমন মন্তব্য করে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ওপর হামলা বা রমনা বটমূলে হামলার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নৃশংস হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব।
আদালত বলেন, এ আদালত চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত, আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাহারা খাতুন, বাহাউদ্দিন নাসিমের জবানবন্দি গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছেন। সাক্ষী নীলা চৌধুরী গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে দূর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।
আদালত বলেন, ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ফলে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডান কান গুরুতর জখম হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতায় যে দলই থাকবে, বিরোধী দলের প্রতি তাদের উদারনীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করা মোটেও গণতান্ত্রিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ নয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর জাতীয় চার নেতা নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু এর পরও ষড়যন্ত্র থেমে না থেকে তা চলমান থাকে। তাৎকালীন রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলা ছিল বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা।
"