আদালত প্রতিবেদক

  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

২১ আগস্ট মামলা প্রসঙ্গে আদালত

বিচারে কোনো ফাঁক রাখার চেষ্টা করিনি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করে আদালত বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন পর এ মামলার বিচারের শেষ দিকে আমরা এসেছি। এ মামলার বিচারে কোনো ফাঁক রাখার চেষ্টা করিনি। কখনো কারো অধিকারবঞ্চিত করিনি। বিচারকাজ শেষ। আমাকে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ কথা বলেন। নৃসংশ ও ভয়াবহ এই হামলা মামলার রায় আগামী ১০ অক্টোবর ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন তিনি। এর আগে বেলা ১টা ৫২ মিনিটে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। মামলায় জামিনে থাকা তিন আইজিপিসহ আট আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে এ মামলার বিচারকাজ চলছে। রায় ঘোষণার দিন ঠিক হওয়ার পর সরকারি কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব শেষ করে দেওয়ার জন্য এ হামলা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এ এম শাহজাহান বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই। সন্দেহের ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না।’ আদালত বলেন, ‘এত দিন ধরে এখানে বিচারকাজ পরিচালনা করে আদালত বড় আপন হয়ে গেছে। এ আদালতের জানালা, ফ্যান-সবকিছু বড় চেনা। আর এক দিন এখানে আসতে হবে। সেদিন আমি রায় ঘোষণা করব। আসামিরাও বিচারকাজে সহায়তা করেছেন।’

আসামিদের জামিন বাতিলের ব্যাপারে আদালত বলেন, ‘আসামিরা জামিনে থাকলে বিচারে সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য আসামিদের জামিন বাতিল করা হলো।’ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে ভয়ংকর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। গুরুতর আহত হন শেখ হাসিনাসহ দলের কয়েক শ’ নেতাকর্মী। তাদের অনেকে আজও শরীরে গ্রেনেডের সিøন্টার নিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই এ-সংক্রান্ত হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দুটির বিচার শুরু হয়। ৬১ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারে এসে এর অধিকতর তদন্ত করে। এরপর বিএনপির নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, জামায়াতের নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদসহ ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

এরপর দুই অভিযোগপত্রের মোট ৫২ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরু হয়। অন্য মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৪৯। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close