আদালত প্রতিবেদক

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

গুজবের মামলায় দুই দিন করে রিমান্ডে সেই ১২ শিক্ষার্থী

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলার সময় গুজব ছড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় সেই ১২ শিক্ষার্থীর দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক নিরু মিয়া আসামিদের আদালতে হাজির করেন সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেককে দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে ঢাকার তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়া থেকে ‘নিখোঁজ’ ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, রোববার ১২ জন শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলাকালে গুজব সৃষ্টিকারীদের অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজও রয়েছেন। এদিকে ১২ শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, তাদের আটক করা হয়েছে গত ৫ আগস্ট। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিল।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, তারেক আজিজের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এবং বাকিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এ দুটি মামলা হয়। গ্রেফতার শিক্ষার্থীরা হলেন তারেক আজিজ, জাহাঙ্গীর আলম, মোজাহিদুল ইসলাম, তারেক, আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন, ইফতেখার আলম, মেহেদী হাসান রাজিব, মাহফুজ, সাইফুল্লাহ ও রায়হানুল আবেদিন।

গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়াদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের মনোগ্রামসহ ১২ সেট ইউনিফর্ম, ১৩টি ফিতাসহ আইডি কার্ড, হ্যান্ডমাইক, ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, তিনটি ল্যাপটপ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মপদ্ধতির বিভিন্ন ফর্ম, শিবিরের কিশোর কণ্ঠ ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ইসলামী বই, বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে লেখা ডায়েরি ও ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওসহ ছবি জব্দ করা হয়।

গ্রেফতার ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, তারা গত ২৯ আগস্ট শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা/পোস্ট/ফটো/ভিডিওর মাধ্যমে গুজব ছড়ায়।

মাসুদুর রহমান আরো জানান, গত ৬ আগস্ট দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগত ছাত্ররা ৪০০ থেকে ৫০০ জন একত্রিত হয়ে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সরকারবিরোধী বিভিন্ন উত্তেজনাকর সেøাগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের সেøাগান দিতে থাকে। উচ্ছৃঙ্খল ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ছাত্রদের ইটপাটকেলের আঘাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পিআই আবু হাজ্জাজ, এসআই ইমাম হোসেন, এএসআই আজাদ, এএসআই ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করা ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজ ফেসবুক টাইম লাইনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত করত।

গত ৫ সেপ্টেম্বর নিখোঁজের তিন দিন পরও সন্তানদের খোঁজ না পেয়ে রোববার দুপুরে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিখোঁজ ১২ শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, রাজধানীর মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকা থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১২ শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ওইদিন এই ১২ শিক্ষার্থীর সঙ্গে আরো কয়েকজনকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। তবে ১২ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close