ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আত্মহত্যা করে বাল্যবিবাহ থেকে নিষ্কৃতি রমিছার
ষষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী রমিছা খাতুন (১২)। প্রায় তিন মাস পূর্বে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ দেয় পরিবার। স্বামীর বাড়ি থেকে পিত্রালয়ে আসার পর আর স্বামীর বাড়িতে যেতে চাইত না সে। পারিবারিক ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের চাপ বাড়তে থাকে শিশু রমিছার ওপর। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে বিষপান করে আত্মহত্যা করে রমিছা খাতুন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায় ফুলবাড়িয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের বৈলাজন গ্রামে।
বৈলাজান গ্রামের পান ব্যবসায়ী রুহুল আমীনের মেয়ে শিবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী রমিছা খাতুনকে গত ঈদুল ফিতরের পর পার্শ্ববর্তী তেজপাটুলী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানার কাছে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে পর স্বামী বাড়ি থেকে এসে তার পিতা মাতাকে জানিয়ে দেয়, সে আর স্বামী বাড়িতে যাবে না। একাধিকবার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার দুপুরে রমিছা খাতুনের শ্বশুর নজরুল ইসলাম তাকে নিতে এলে সে আর যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য পারিবারিকভাবে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করলে বিকেলে বাড়ির পাশে গিয়ে বিষপান করে। বাড়ির লোকজন গুরুতর অবস্থায় দ্রুত হাসপতালে নেওয়ার পথে রমিছার মৃত্যু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এসআই সেকান্দর আলী বলেন, মেয়েটির অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হয়েছিল। স্থানীয়দের মতে, মেয়েটির মানসিক চাপে ভুগছিল।
রমিছার বাবা রুহুল আমীন বলেন, রমিছার অল্প বয়স হলেও শরীর স্বাস্থ্য ভালো হওয়ায় বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলাম। মানসিকভাবে কিছুটা সমস্যা ছিল, দুপুরে শ্বশুর নিতে এলে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছে, বিকেলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান বলেন, মেয়েটি বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। শিবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. মগ্নি বলেন, রমিছা মেধাবী ছাত্রী ছিল, তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়েছিল বলে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
"