নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ আগস্ট, ২০১৮

ফাঁকা হচ্ছে যানজটের ঢাকা

নেই চিরাচরিত কোলাহল, যানজটও। ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরছে নগরবাসী। আর এতেই বদলাতে শুরু করেছে ঢাকার চিত্র। মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে থাকা নগরীতে কমতে শুরু করেছে যানজট। অধিকাংশ সড়কে যান চলাচল কমেছে। বড় সড়ক ছাড়া অন্যত্র কোলাহল নেই বললেই চলে। কমে এসেছে নগরীর গণপরিবহন, রিকশা-অটোরিকশাও। তবে আধিক্য রয়েছে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসের। যানজট কম থাকায় নগরবাসীর ব্যক্তিগত যান চলাচল করছে নির্বিঘেœ। গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকে রাজধানীজুড়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ঢাকার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের চিত্র ছিল গতানুগতিক। তবে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম বলে যানজট ছিল না। সন্ধ্যার পরও মতিঝিলের যেসব রাস্তা থাকে বাস-রিকশা আর হকারদের দখলে, দুপুরের দিকে সেখানকার চিত্র ছিল কিছুটা ফাঁকা। যানবাহনের সঙ্গে কমে গেছে হকারের সংখ্যাও।

ঘরমুখো মানুষদের বাড়ি ফেরার হিড়িক পড়ে গেছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই। চাকরিজীবীরা আগেই পরিবারের সদস্যদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন।

গত কয়েক বছর থেকে রাস্তায় গাড়ির চাপ কমাতে রাজধানীর গার্মেন্টগুলোতে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া হয়। কোনো কোনো গার্মেন্ট দুতিন দিন আগে থেকেই ছুটি দিয়ে দেয়। গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর অনুরোধে এই কাজ করা হয়।

ধারণা করা হচ্ছিল, গেল শুক্রবারের পর আর তেমন যানজট থাকবে না। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি অফিস চলমান থাকা ও রাস্তাঘাটে উন্নয়ন কাজের জন্য বেহাল অবস্থার কারণে সোমবারও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে ঘরমুখো মানুষদের। ফলে যানজট তেমন না থাকলেও গাড়ি চলছে ধীর গতিতে।

এদিকে, গতকাল রেল, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে নেমেছে ঘরমুখো মানুষের ঢল। রাজধানীর কমলাপুর এবং বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘরমুখো মানুষের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই উঠছেন ট্রেনের ছাদে। এ ছাড়া প্রতিটি ট্রেনই ৩-৪ ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, মানুষের বাড়তি চাপের কারণে ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়।

এ ছাড়া ঈদে যাত্রীদের ঘরে ফেরা উপলক্ষে বাস-ট্রেন ও লঞ্চঘাটে নিরাপত্তার দায়িত্বে র‌্যাব-পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত রাজধানীর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে দুই সপ্তাহের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে র‌্যাব। গত ১৩ আগস্ট থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলবে আগামী রোববার (২৬ আগস্ট) পর্যন্ত। এ তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

তিনি জানান, ঈদে ঘরমুখী মানুষের চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দুই সপ্তাহের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সারা দেশে ২৪৫টি পেট্রল টিম মোতায়েন আছে। রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছে ৫৬টি। ঢাকার এক্সিট পয়েন্টগুলোয় বসানো হয়েছে ২০টি অস্থায়ী ক্যাম্প। মেঘনা ও মধুমতি ব্রিজে অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। দৌলতদিয়া ও মাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মাওয়ায় নাব্য সমস্যা আছে। যে কারণে বড় ফেরিগুলো চলাচল করতে পারছে না। ড্রেজিং করে নাব্যতা ফেরানোর কাজ চলছে। সদরঘাট এলাকায় বাড়ি ফেরার জন্য মানুষের চাপ ছিল। তবে লঞ্চগুলোতে ওভারলোডিং চোখে পড়েনি। গার্মেন্টগুলো এখনো চালু রয়েছে। তাদের ছুটি হওয়ার পর কিছুটা চাপ বাড়বে। আমরা সেই চাপ সামলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। সারা দেশে ৬৮টি ট্রেন আপ-ডাউন করছে। কিশোরগঞ্জ ও দিনাজপুর ঈদের জামাতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সারা দেশে বড় জামাতগুলো র‌্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান মহাপরিচালক।

র‌্যাব সূত্র জানায়, ঈদযাত্রায় মহাসড়কের কোথায় কী অবস্থা, তা ফেসবুকের মাধ্যমে সবাইকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে র‌্যাব। মহাসড়কের পাশাপাশি রেল স্টেশন ও লঞ্চঘাটের অবস্থাও বাহিনীর বিভিন্ন ফেসবুক পাতায় জানানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close