নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ আগস্ট, ২০১৮

খসড়া অনুমোদন

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেফতারে অনুমতি লাগবে

প্রধানমন্ত্রীর হাতে ইউনিসেফের দুই পুরস্কার

ফৌজদারি ও দুর্নীতির মামলায় চার্জশিটের আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এ বিধান যুক্ত করে ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে, এই সভার শুরুতে বাল্যবিয়ে-বিরোধী প্রচারণার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ইউনিসেফের দুই পুরস্কার তুলে দিয়েছেন নারী ও শিশু-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও সচিব নাসিমা বেগম। পুরস্কার দুটি হচ্ছে ‘দি অ্যাকোলেড গ্লোবাল ফিল্ম কমপিটিশন ২০১৭ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘দি অ্যাকোলেড উইনার অ্যাওয়ার্ড অব এক্সিলেন্স অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারেজ’। এ ছাড়া সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারসহ বিশিষ্টজনদের মৃত্যুতে মন্ত্রিসভায় শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এই বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো রয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ আইয়ুবুর রহমান।

সভা শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, ছয়টি বিধিমালা দ্বারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, শৃঙ্খলাবিধিসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ-সংক্রান্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ আইন নেই। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও পূর্ণাঙ্গ আইনের প্রয়োজনীয়তার সাপেক্ষে নতুন আইনটি করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলে চার্জশিট দেওয়ার আগে সরকারের অনুমোদন ছাড়া তাকে গ্রেফতার করা যাবে না।

সচিব আরো জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনেও কারো বিরুদ্ধে মামলা হলে অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে সরকারের অনুমোদন লাগবে।

শফিউল আলম জানান, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা হবে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের ভিত্তি। যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা বিদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে, তাহলে তার চাকরি থাকবে না।

এই আইন পাস হলে দুদক ফাঁদ পেতে কোনো সরকারি কর্মচারীকে গ্রেফতার করতে পারবে কি না- এ প্রশ্নে সচিব বলেন, চার্জশিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। চার্জশিট হওয়ার আগে গ্রেফতার করতে হলে আগে অনুমতি নিতে হবে।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০৬ সালে ‘সিভিল সার্ভিস আইন’ নামে গণকর্মচারীদের জন্য আইন তৈরির উদ্যোগ নিলেও সে সময় কোনো খসড়া প্রণয়ন হয়নি। পরে ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই আইনের খসড়া তৈরি করে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সরকারি কর্মচারী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করতে ২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারি একটি কমিটি করে দেয়।

২০১৪ সালের ২১ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে। ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই প্রস্তাবিত খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর সরকারি কর্মচারী আইনের খসড়া ফের মন্ত্রিসভায় তোলা হলেও তাতে চূড়ান্ত অনুমোদন না দিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার অনুশাসন দেয় মন্ত্রিসভা।

পরে জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় তা খসড়া উপস্থাপন করা হয়।

এরপর প্রস্তাবিত আইনটির কয়েকটি ধারা বিশ্লেষণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইনকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি উপকমিটি করে দেয় সরকার। গত এপ্রিলে ওই কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে সচিব কমিটির সভায় তা অনুমোদন দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close