প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ আগস্ট, ২০১৮

পবিত্র হজ পালিত

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফাত ময়দান

ইহরাম অবস্থায় মুসল্লিদের পদচারণায় আরাফাতের ময়দান পরিণত হয়েছে শুভ্রতার সমুদ্রে। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)-ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছে ময়দান। গতকাল সোমবার সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত লাখ লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান হাজি আরাফাতের ময়দানে ছিলেন। কেউ পাহাড়ের কাছে, কেউ সুবিধাজনক জায়গায় বসে ইবাদত করেন।

সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিশ্বের ১৬৪টি দেশের ২০ লাখের বেশি মুসলমান এবার হজ করছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সোয়া এক লাখের মতো। হজের আনুষ্ঠানিকতার শুরুতে গত শনিবার মক্কার কাবা শরিফ থেকে রওনা হয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় জড়ো হন মুসলমানরা। আর রোববার সারা দিন এবং রাত তারা মিনায় কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, নামাজ পড়েন জামাতের সঙ্গে।

হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য গতকাল ভোরের আগেই তারা সমবেত হতে থাকেন প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে বিদায় হজের স্মৃতি জড়িত আরাফাতের ময়দানে। সেলাইবিহীন শুভ্র এক কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা সেখানে ছিলেন। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরো প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।

পবিত্র এই ভূমিতে মুসলিমগণ যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শোনেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ পড়েন। সৌদি দৈনিক আল আরাবিয়ার খবরে বলা হয়, বাদশাহ সালমান এবার হজের খুতবা পড়ার দায়িত্ব দিয়েছেন মসজিদে নববীর ইমাম শেখ হুসেইন বিন আবদুল আজিজকে। এ খুতবা রেডিও ও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।

মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়া পৃথিবীতে পুনর্মিলনের পর এই আরাফাতের ময়দানে এসে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। ১৪০০ বছরের বেশি সময় আগে এখানেই ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) দিয়েছিলেন তাঁর বিদায় হজের ভাষণ।

এই আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হয় স্বল্প সময়ের জন্য।

ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হলো হজ।

আরাফাত থেকে মিনায় ফেরার পথে সন্ধ্যায় মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়েন সমবেত মুসলমানরা। মুজদালিফায় রাতে থাকার সময় তারা পাথর সংগ্রহ করেন মিনার জামারায় শয়তানের উদ্দেশে ছোড়ার জন্য। আজ মঙ্গলবার সকালে মিনায় ফিরে সেই পাথর তারা প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close