মালয়েশিয়ায় এখন অবৈধ শ্রমিকদের দুঃসময় চলছে। কোনোভাবেই অবৈধ শ্রমিকরা আর সেদেশে থাকতে পারবেন না। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে অবৈধ শ্রমিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে হবে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি অবৈধ শ্রমিকদেরও দেশে ফিরে আসতে হবে। আর যারা ফিরবেন না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে দেশটির সরকার।

সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে থাকা বিদেশি শ্রমিকদের বৈধ করতে ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রি-হায়ারিং প্রকল্প হাতে নেয় দেশটি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নিবন্ধন করে অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। দফায় দফায় এ প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছিল। সর্বশেষ ৩০ জুন এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে অনেক অবৈধ বাংলাদেশি এ প্রকল্পের সুযোগ নিতে পারেননি।

মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় দুই লাখ কর্মীই অবৈধ। যাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। অবৈধ কর্মীদের বৈধতা দিতেই রি-হায়ারিং প্রকল্প গ্রহণ করেছিল দেশটির সরকার। রি-হায়ারিং প্রকল্পে নিবন্ধন শেষ ধাপে অবৈধ কর্মীদের বৈধতা দেবে বলেও জানিয়েছিল দেশটি। তবে অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট ও কাগজপত্র না থাকায় তারা এ সুযোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। মালয়েশিয়ায় রি-হায়ারিং প্রকল্প প্রায় আড়াই বছর ধরে চলেছে। আর এ সময়ের মধ্যে অবৈধ শ্রমিকদের ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে দেশটির সরকার। এসব অভিযানে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের নাগরিকদেরও গ্রেফতার করা হয়। গত আড়াই বছরে প্রায় তিন হাজার অবৈধ বাংলাদেশিকে গ্রেফতারও করে মালয় সরকার।

অবৈধ কর্মীদের ফেরাতে দেশটির সরকার থ্রি-প্লাস ওয়ান স্কিম চালু করেছে। এ স্কিমের আওতায় একজন অবৈধ কর্মী মালয়েশিয়া এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশনে ৪০০ রিঙ্গিত জমা দিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে অনেক বাংলাদেশি অভিযোগ করেছেন, এয়ারপোর্ট গেলে ৪০০ রিঙ্গিতের জায়গায় ৮০০, হাজার বা ১২০০ রিঙ্গিত নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেককে হয়রানি করা হচ্ছে। সে কারণে অনেকেই এয়ারপোর্টে গিয়ে এ সুবিধা নিতে পারছেন না।

এ বিষয়ে কুয়ালালামপুর থেকে বাংলাদেশি কর্মী শফিকুর রহমান জানান, অনেক অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরতে চান। তবে এয়ারপোর্টে বেশি রিঙ্গিত দেওয়া আর হয়রানির জন্য ফিরতে পারছেন না। ৪০০ রিঙ্গিত দিয়ে ফিরতে বলা হলেও হাজার রিঙ্গিত নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেকের কাছে এ রিঙ্গিত দেওয়ার ক্ষমতাও নেই।

এদিকে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী জানিয়েছেন, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে এখান থেকে সব অবৈধ শ্রমিককে থ্রি-প্লাস ওয়ান পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। যারা ওই তারিখের মধ্যে দেশে ফিরবেন না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেছেন, বৈধকরণ প্রকল্পে যারা নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের আটক করা হবে। দেশের নিরাপত্তা রক্ষার তাগিদে কোনো পক্ষের সঙ্গে আপসে যাবে না প্রশাসন।

"