নিজস্ব প্রতিবেদক
‘যাত্রী না পেয়ে’ দুটি হজ ফ্লাইট বাতিল
যাত্রী কম থাকার কথা বলে দুটি হজ ফ্লাইট বাতিল করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এর মধ্যে বিজি ১০৪৫ ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা ৫ মিনিটে। আর বিজি ৭০৪৫ ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিট। এই দুই ফ্লাইটে সৌদি আরবে পৌঁছাতে পারতেন আট শতাধিক হজযাত্রী। বিমানের জনসংযোগ শাখার জি এম শাকিল মেরাজ বলেন, ‘আসন সংখ্যার তুলনায় অনেক কম টিকিট বিক্রি হওয়ায় হজ ফ্লাইট দুটি বাতিল করা হয়েছে। ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের অন্য ফ্লাইটের সঙ্গে সমন্বয় করে পাঠানো হবে।’
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ ২৬ হাজার ১৯৮ জন হজ করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে ৬ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং এক লাখ ২০ হাজার জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন। গতবছর ভিসা জটিলতায় যাত্রী না পেয়ে ২৪টি হজ ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল বিমান। তাতে ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয় রাষ্ট্রায়ত্ত এই বিমান পরিবহন সংস্থা। ওই জটিলতা এড়াতে সরকার এবার ভিসা হওয়ার আগেই সব এজেন্সিকে নিজ নিজ যাত্রীদের টিকিট বিমান সংগ্রহ করতে বলেছিল।
কিন্তু বেশ কিছু এজেন্সি এখনো তাদের হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরবে বাসা ভাড়া করতে না পারায় সেসব এজেন্সি টিকিট সংগ্রহ করেনি। ফলে বিমানের হজ ফ্লাইটের প্রায় আট হাজার টিকেট এখনো অবিক্রিত পড়ে আছে। এদিকে বাংলাদেশে হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদ বলছে, হজের জন্য প্রাক নিবন্ধন করা হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। নিবন্ধিত হওয়ার পরও শারীরিক বা আর্থিক সমস্যা কিংবা অন্য কারণে অনেকে হজে যেতে পারছেন না। আবার সরকার হজযাত্রী প্রতিস্থাপনের সীমা বেঁধে দেওয়ায় সেই শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে না। টিকেট অবিক্রিত থাকার এটাও একটা কারণ। যারা যেতে পারছেন না, তাদের পরিবর্তে অপেক্ষামাণ তালিকা থেকে হজে পাঠাতে ১৫ শতাংশ নাম প্রতিস্থাপন করার সুযোগ চেয়েছে সংগঠনটি।
মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতার মত অনিবার্য কারণে কোনো নিবন্ধিত হজযাত্রী যেতে না পারলে তার বদলে অন্য কোনো নিবন্ধিত ব্যক্তিকে হজে পাঠানোর সুযোগ দেওয়া হয় এজেন্সিগুলোকে। সেজন্য চিকিৎসকের সনদ ও অঙ্গীকারনামাসহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হয়। প্রত্যেক এজেন্সি তাদের মোট হজযাত্রীর মধ্যে সর্বোচ্চ আট শতাংশকে ওই নিয়ম মেনে প্রতিস্থাপন করতে পারে। এবার প্রতিস্থাপানের আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ২৪ জুলাই।
কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ আল নাসের শুক্রবার সকালে তোপখানা রোডের মেট্রোপলিটন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিভিন্ন কারণে প্রায় ১৮ হাজার নিবন্ধিত ব্যক্তি এবার হজে যেতে পারছেন না। ৮ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট করলেও আরো আট হাজার ঘাটতি থাকে। এ ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ রিপ্লেসমেন্ট করলে কোটা পূরণ সম্ভব। তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪০৮ জন। কিন্তু ২০১৯ সালেও বাংলাদেশ থেকে এবারের মতই হজযাত্রী সৌদি যাওয়ার সুযোগ পাবেন।’
তাই সরকারের কাছে কোটা খালি না রেখে অপেক্ষামাণদের মধ্যে থেকে ১৫ শতাংশ প্রতিস্থাপনের ?সুযোগ দিয়ে কোটা পূরণের দাবি জানান বাংলাদেশে হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদ। সংগঠনের সহসভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আশরাফীসহ নেতৃবৃন্দ এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
"