রাজশাহী ব্যুরো
রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচার
মাঝে একদিন, তারপর রাত পোহালেই নির্বাচন। প্রার্থীরা সবাই শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। রোদ-বৃষ্টি এবং অসহ্য গরম উপেক্ষা করে তারা নির্বাচনী মাঠে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। সকলেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করছি জনগণ বিপুলভাবে নৌকার পক্ষে রায় দেবে, রাজশাহীতে ইতিহাস সৃষ্টি হবে। শুক্রবার নির্বাচনী গণসংযোগের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি নির্বাচনে সেনা মোতায়নের মতো কোনো পরিবেশ হয়নি। তাই সেনা মোতায়নের প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি নির্বাচন কমিশন মনে করে, মোতায়েন করতে পারে, সেটি তাদের ব্যাপার। এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আনুষ্ঠানিক প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা মিথ্যাচার করে আসছে। আমরা জানতাম যে, নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা মিথ্যাচার করবে, তাই হচ্ছে। তারা ভোট ডাকাতির কথা বলছে। ভোট ডাকাতির ইতিহাস তো তারাই সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার দুপুরে নগরীর জাহাজঘাট জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে জাহাজঘাট, ধরমপুর, খোজাপুর ও তালাইমারি মোড়ে গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সকল প্রকার নির্বাচনী সন্ত্রাস রুখে দেওয়া হবে : বুলবুল
শুক্রবার বিএনপি মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নগরীর ৬ ও ৮ নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুর এলাকার কাঁচা বাজার ঝাউতলা, লক্ষ্মীপুর মোড় ও কাজিহাটাসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচারণা করেন এবং ধানের শীষের ভোট প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনে জোর করে বিজয়ী হওয়ার বাইরে থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোক ভাড়া করে নিয়ে এসেছে।
বুলবুল নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় গণসংযোগ শুরু করার পূর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজশাহীর প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও অন্যান্য আবাসস্থল ইতোমধ্যে দখল করে নিয়েছে। রাজশাহীর সকল মেস থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়েছে। এমনকি পুলিশ ভোটের দিনের পূর্বের রাতে ব্যালট পেপারে নৌকার পক্ষে সিল মেরে বাক্সবন্দি করে রাখার ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও পুনরায় নির্বাচনের পূর্বে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান বুলবুল।
রাসিকের ২১ নং ওয়ার্ডে নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন হতাশাজনক নগরীর শিরোইল, খুলিপাড়া, বাস্তুহারাপাড়া ও সাগরপাড়া বল্লভগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি মহল্লা নিয়ে ২১ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। এখানে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন বর্তমান কাউন্সিলর নিযাম-উল আযীম (মিষ্টিকুমড়া), সাবেক কাউন্সিলর এস শহিদ আহমদ বাদল (ঘুড়ি), আসাদুজ্জামান রেবু (রেডিও) এবং হাসিবুল হক (ঠেলাগাড়ি)।
নিযাম-উল আযীম ২০০২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিন দফা এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ১৫ জুন থেকে পরবর্তী ১৬ মাস তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তবে এসব দায়িত্ব পালন করলেও ওয়ার্ডটির উন্নয়নে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলেও অভিযোগ ভোটারদের। নিযাম-উল আযিম হোল্ডিং ট্যাক্স কয়েক শ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ।
এ ওয়ার্ডের খুলিপাড়া, মাছুয়াবাজার, শিরোইল, বিহারীপাড়াসহ অনেক মহল্লার গলিপথের অনেক রাস্তা এখনো কাঁচা রয়েছে। ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহিদ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন কাউন্সিলর থাকার পরও নিজাম উন্নয়ন করতে পারেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র থাকাকালেও নিজের ওয়ার্ডের অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কাজ করেননি। রয়েছে দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মহলদার পাড়ায় দশ মিনিটের বৃষ্টিতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। তিন-চার বছরেও মশক নিধনে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কাউন্সিলর নিযাম-উল আযীম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ওয়ার্ডে প্রতিদিন ড্রেন পরিষ্কার করা হয়। প্রতি শুক্রবার ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গার জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করা হয়। রাস্তাঘাট, ড্রেন ও মহলদার পাড়ার মসজিদসহ মোট ৭০ লাখ টাকার কাজ করা হয়েছে। অযাচিত কারো হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়নি। এবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করব।
"