নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ জুলাই, ২০১৮

বাড্ডায় আ.লীগ নেতা ফরহাদ হত্যা : আরো ৫ আসামি গ্রেফতার

সন্ত্রাসী রমজানের নির্দেশেই খুন

বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী রমজানের নির্দেশেই বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীকে হত্যা করা হয়। এলাকায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ফরহাদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এরপর রমজান তার ছোট ভাই সুজন, সহযোগী জাকির ও আরিফকে এই হত্যাকান্ডের দায়িত্ব দিয়ে ঘটনার কয়েকদিন আগেই ভারতে চলে যান। গতকাল শনিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা ও অপরাধ-তথ্য বিভাগের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান ও মিরপুরের শাহআলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফরহাদ হত্যা মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা হলেনÑ জাকির হোসেন, আরিফ মিয়া, আবুল কালাম আজাদ ওরফে অনির, বদরুল হুদা ওরফে সৌরভ ও বিল্লাল হোসেন ওরফে রনি। এর মধ্যে জাকির হোসেন ও আরিফ মিয়াকে গুলশান থেকে আর আজাদ ওরফে অনির, বদরুল হুদা ওরফে সৌরভ ও বিল্লাল হোসেন ওরফে রনিকে মিরপুরের শাহআলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চারটি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন ও ১২ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়। গত ১০ জুলাই একই হত্যা মামলার আসামি জহিরুল ইসলাম ওরফে সুজনকে গ্রেফতার করার পর আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, ফরহাদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রমজান। এরপর বিষয়টি আশিক ও মেহেদীকে জানান। পরে তারা ফরহাদকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। রমজান তার ছোট ভাই সুজন এবং দুই সহযোগী জাকির ও আরিফকে এই হত্যাকান্ডের দায়িত্ব দিয়ে ঘটনার কয়েকদিন আগেই ভারত চলে যান। রমজান এখনো ভারতে পলাতক। শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদী ওরফে কলিন্স এ হত্যাকান্ডের দায়িত্ব দেন তাদের বেতনভুক্ত শুটার নুর ইসলাম, অনির, সৌরভ ও সাদকে।

তিনি আরো জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জুন সকালে কিলাররা উত্তর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর ‘বাংলাদেশে সামরিক কমান্ডার’ অমিতের সঙ্গে খুনের বিষয়ে আলোচনা করেন। সেখান থেকে সুজনের সঙ্গে হত্যাকান্ডের আরেক সহযোগী অমিত ছাড়া সবাই মিলে একটি রিকশার গ্যারেজ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করেন। এ অস্ত্র তাদের কাছে বুঝিয়ে দেন মেহেদীর সহযোগী পুলক ওরফে পলক। পরে অমিতের নির্দেশনা অনুযায়ী নুর ইসলাম, অনির ও সৌরভ মূল কিলিং মিশনে অংশ নেন। আর তাদের ব্যাকআপ হিসেবে ঘটনাস্থলের কিছু দূরে থাকেন সাদ ওরফে সাদমান। পরে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় তাদের সহযোগী আরিফ ফরহাদকে চিনিয়ে দেন। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফরহাদ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুটাররা গুলি চালান। এরপর মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পালানোর জন্য বাড্ডা লিংক রোডের পুলিশের চেকপোস্টে গুলি চালান নুর ইসলাম ও অনির।

আবদুল বাতেন বলেন, হত্যাকান্ডের পর সবাই অস্ত্র জমা দিতে পল্লবীতে অমিতের কাছে যান। ওই সময় হত্যাকান্ডের জন্য অমিত ১ লাখ টাকা তাদের সবাইকে ভাগ করে দেন। এরপর পালিয়ে থাকতে শুটাররা বরিশাল চলে যান। সেখানে বেশ কিছুদিন থেকে তারা আলাদা হয়ে ঢাকায় ফিরে আসেন। হত্যাকান্ডের পর রমজানের ছোট ভাই সুজন দেশত্যাগ করে ভারত চলে যান। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর ফিরে আসেন। গত ৪ জুলাই রাতে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ফরহাদ হত্যাকান্ডের দুই শুটার নুর ইসলাম ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদীর সামরিক কমান্ডার অমিত নিহত হন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবদুল বাতেন বলেন, বাড্ডা-গুলশান এলাকায় এই কিলারদের নিয়ন্ত্রণ করে বিদেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিক ও মেহেদী। তার মধ্যে মেহেদী আমেরিকায় ও আশিক ভারতে থাকেন। তাদের গ্রুপের আরো কয়েকজন রয়েছেন সুইডেন, ফ্রান্স ও মালয়েশিয়ায়। তবে আশিক বিএনপির সময়ে বিশাল একটি ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করতেন। বিদেশে বসে তারা এখনো দেশের বিভিন্ন শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও ইন্ডাস্ট্রির মালিকদের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করছেন। তারা শিগগিরই দেশে আসছেন বলেও হুমকি দিচ্ছেন। পুনরায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের কার্যক্রম চালাতে ও আধিপত্য বিস্তার করতে এসব হত্যাকান্ড ঘটানো হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist