নিজস্ব প্রতিবেদক
শান্তিতে ঘুমানোর নরম বালিশ পাচ্ছেন বন্দি ও কয়েদিরা
আরামে ঘুমানোসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে কারাবন্দি ও কয়েদিদের প্রথমবারের মতো ব্যবহারের জন্য একটি করে কাভারযুক্ত বালিশ দেবে কারা অধিদফতর। বন্দির মানসিক শান্তি ও সুস্থতাকে প্রাধান্য দেওয়া এবং কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে রূপান্তরের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকেই শিমুল
তোলার কাভারযুক্ত নরম বালিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। অতিরিক্ত কোনো প্রকার সরকারি খরচ না করেই বালিশ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে অধিকসংখ্যক আটক, বন্দি ও গুরুত্বপূর্ণ কারাগার বিবেচনায় দেশের সব কেন্দ্রীয় কারাগার ও অধিকসংখ্যক বন্দি থাকা কারাগারগুলোতে বালিশ দেওয়া হবে। বর্তমানে শুধু ডিভিশনপ্রাপ্ত ও অসুস্থ অবস্থায় কারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, এমন বন্দিদের বালিশ দেওয়া হয়। কারা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারা সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এ কাজের অংশ হিসেবে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ৪৮ লাখের বেশি টাকা ব্যয়ে ১৬ হাজার ৪২০টি বালিশ ক্রয় করেছে কারা অধিদফতর। বাকি আরো ৫০ হাজার ৩৫৫টি বালিশ কেনার কাজ প্রক্রিয়াধীন। বাকি বালিশ চলতি অর্থবছরেই কেনা হবে। প্রতিটি বালিশ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে এক বছরের জন্য ওয়ারেন্টি দিতে হবে। এর মধ্যে বালিশ নষ্ট হয়ে গেলে তা প্রতিস্থাপন করবে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি কাভারযুক্ত বালিশ কেনায় ব্যয় হচ্ছে ৩০০ টাকা।
সূত্র জানায়, কারাগারে নতুন কোনো বন্দি প্রবেশের পর তার পরিচয় শেষেই থাকা ও খাওয়ার জন্য হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় তিনটি কম্বল, একটি থালা ও একটি বাটি। একটি কম্বল গায়ে দেওয়ার, একটি বিছানোর জন্য অপরটি দেওয়া হয় ভাঁজ করে মাথার নিচে বালিশ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। তবে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি ও হাসপাতালে ভর্তি বন্দিরা আগে থেকেই বালিশ ও মশারি ব্যবহার করতে পারেন। এ উদ্যোগের ফলে কারাগারে আটক সব শ্রেণির বন্দিই ব্যবহারের জন্য বালিশ বরাদ্দ পাবেন। কারা কর্তৃপক্ষের ধারণা, বন্দিরা বালিশ পেলে আরামদায়কভাবে ঘুমাতে পারবেন। যার ফলে বন্দির স্বাস্থ্য সুরক্ষা অনেকটা সহজ হবে। তারা মানসিক শান্তি অনুভব করবেন।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন এ বিষয়ে বলেন, ‘ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে দৈনন্দিন কাজে স্বাভাবিকভাবেই সমস্যার সৃষ্টি হয়। আর কারাগারে আটক বন্দিদের ক্ষেত্রে যার প্রভাব সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। রাতে পর্যাপ্ত ও আরামদায়ক ঘুম না হওয়ায় অনেক বন্দিই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারা মানসিক সমস্যায় ভোগেন। মানবাধিকার রক্ষাসহ বন্দির সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে আমরা তাদের ঘুমানোর জন্য কম্বলের বর্তমান পদ্ধতির পরিবর্তে আরামদায়ক কাভারযুক্ত বালিশ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এসব বালিশ বন্দির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বন্দিরা উপকৃত হবেন।’
"