নিজস্ব প্রতিবেদক
বাস চাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
চালক মুন্না গ্রেফতার দোষ স্বীকার
রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী সৈয়দ মো. মাসুদ রানাকে চাপা দেওয়া দিশারী পরিবহনের চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম মো. হামিদ ওরফে মুন্না (৩৪)। গতকাল বুধবার ভোরে লক্ষ্মীপুরের মনু মিয়া মোল্লাবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃত মুন্না পুলিশের কাছে তার দোষ স্বীকার করেছেন। মুন্না পুলিশকে বলেছেন, ‘রিকশায় ধাক্কা লাগার পর তিনি বুঝতে পারেনি, তার গাড়ির নিচে কেউ পড়েছে। তাই গাড়ি চালিয়ে গেছেন।’
বিইউবিটির ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর মো. আবু সালেহ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মাসুদ রানা বিউবিটির বিবিএ বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
শাহ আলী থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাসটি ঘটনার পর আটক করা হয়। এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কের ঈদগাহ মাঠ মোড়ে বাসচাপায় নিহত হন মাসুদ রানা। প্রতিদিনের মতো রিকশাযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে দিশারী পরিবহনের একটি বাস মাসুদ রানাকে ধাক্কা দিলে তিনি রিকশা থেকে পড়ে যান। এরপর বাসটি না থামিয়ে তার গায়ের ওপর দিয়ে চালিয়ে যায় চালক। এতে তার কোমরের নিচের অংশ থেঁতলে যায়। রিকশাচালকও গুরুতর আহত হন। সড়কেই কিছুক্ষণ পড়ে থাকেন মাসুদ রানা ও রিকশাচালক। পরে একটি ভাঙারির দোকানের তিন তরুণ এগিয়ে আসেন। তারা একটি অটোরিকশায় তুলে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায় দুজনকে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন। মাসুদ মিরপুরের দক্ষিণ বিসিলের নিজেদের বাড়িতে বাবা-মা ও ভাইবোনের সঙ্গে থাকতেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাসুদ রানা ছিলেন সবার বড়।
মাসুদ রানার এমন নির্মম মৃত্যুর পর তার সহপাঠীরা বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন সোম ও মঙ্গলবার। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্বাসে তারা গত মঙ্গলবার দুপুরে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে। পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার হলো চালক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) অনুজ কুমার ঘটনার দিন থেকেই গাড়ি চালক হামিস ওরফে মুন্নাকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করেন। তবে ঘটনার পর মুন্না গাড়ি রেখে লক্ষ্মীপুরে তার গ্রামের বাড়ি চলে যায়। বাড়ি গেলেও সে নিজের বাড়িতে থাকেনি। তিনি পাশের একটি বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
"