গাজীপুর ও টঙ্গী প্রতিনিধি
গাজীপুর সিটি নির্বাচন
চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে জাহাঙ্গীর-হাসান
খুলনা সিটির জয় ঢাকার প্রবেশমুখ গাজীপুরেও ধরে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আর বিএনপি চায় সিটিটি তাদের কব্জায় রাখতে। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট দুই দলের কাছেই চ্যালেঞ্জ। এদিকে শিল্পাঞ্চল ও ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য হওয়াসহ নানা কারণে গাজীপুরে বরাবরই রাজনৈতিক অবস্থান পাকাপোক্ত রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জেলাকে দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ হিসেবেও মনে করে ক্ষমতাসীন দল। সেজন্যই এই নির্বাচন নিয়ে বেশি মনোযোগ আওয়ামী লীগের। দলের কোন্দল মিটে গেছে। নেতারা মনে করেন, এই নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হলে জাতীয় নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচক সাড়া পাবে আওয়ামী লীগ।
জানা গেছে, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের জয়ের কৌশলগুলো হলোÑ দলীয় কোন্দল ও উপ কোন্দল মীমাংসা করা, ভোটারদের কাছে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া, সরকারদলীয় প্রার্থী জিতলে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে, স্থানীয় জনগণের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া। এসব কৌশল অবলম্বন করে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এই নির্বাচনে মাঠে আছে।
এখানে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী দলের মহানগর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার। তারা দিনরাত নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন। তবে ঈদে বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরা বাড়িতে থাকায় অনেক বাসা-বাড়িতে শোক শূন্য রয়েছে। ভোটের আগে ভোটারদের গাজীপুরে ফিরিয়ে আনতে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।
ঈদের ৪র্থ দিন অতিবাহিত হলেও গাজীপুর এখনো ফাঁকা ফাঁকাই রয়ে গেছে। গতকাল বুধবার সকালেও টঙ্গী থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি যেতে সময় লেগেছে মাত্র ৪০ মিনিট। যা অন্য সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। তবে আগামী শনিবার থেকে গাজীপুর আবারো সেই পুরোনো চেহারা ফিরে আসবে বলে ধারণা গাজীপুরবাসীর।
গতকাল বুধবার সকালে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরা থেকে পথসভার মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ১৪ দলের নেতারা প্রচারণায় অংশ নেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা এবং আধুনিক গাজীপুর সিটি গড়ার জন্য নৌকায় ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন।
আওয়ামী লীগের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান নওফেল জয়দেবপুর শিমুলতলি পুজামন্ডপে সনাতন ধর্মের ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মহানগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় নেতা অসীম কুমার উকিল, এস এম কামাল, গোলাম মোস্তফা কাজল, মহানগর নেতা মহিউদ্দিন মহি প্রচারণা চালান। কেন্দ্রীয় নেতা শাহাজাদা মহিউদ্দিন, বলরাম পোদ্দার সকাল থেকে প্রার্থীর সঙ্গে টঙ্গীতে পথসভা এবং গণসংযোগ করেন। এনামুল হক শামীম এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ নগরীর ৪৫, ৪৬, ৫৫ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে ভোট চান। পরে বৃহত্তর ফরিদপুর জনকল্যাণ সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কেন্দ্রীয় নেতারা মন্তব্য করেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্তাভাজন তরুণ্যের প্রতিক জাহাঙ্গীরের পক্ষে, নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৬ জুন গাজীপুরে নৌকার ঐতিহাসিক বিজয় হবে।
এক্ষেত্রে থেমে থাকেননি বিএনপি মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহানগরের ৪০ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও গনসংযোগ করেছেন। এ সময় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা তারে সঙ্গে ছিলেন।
"