ক্রীড়া ডেস্ক

  ২০ জুন, ২০১৮

জাপানের ইতিহাস

‘এইচ’ গ্রুপই একমাত্র জায়গা যেখানে নেই কোনো চ্যাম্পিয়ন দল। কিন্তু তবু এই গ্রুপটা তৈরি করেছে আলাদা রোমাঞ্চ। জাপান, সেনেগাল, পোল্যান্ড ও কলম্বিয়ার গড়া দলটি আবার অনেকের কাছেই ডেথ গ্রুপ। এরপরও ফেভারিট হিসেবে এই গ্রুপে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল পোল্যান্ড ও কলম্বিয়াকে।

এই ভুতুড়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফেভারিট বলে যে কোনো কথা নেই সেটা কাল আরো একবার বোঝা গেল। ল্যাটিন আমেরিকা পরাশক্তি কলম্বিয়াকে হারিয়ে আরো একটা অঘটনের জন্ম দিল জাপান। কাল ১০ জনে পরিণত হওয়া কলম্বিয়ানদের ২-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ফেলল এশিয়ার প্রতিনিধি দলটি।

গ্রুপ পর্বে একটি করে ম্যাচ খেলা হয়েছে সব দলেরই। প্রথম রাউন্ডে মাঝপথও পেরোয়নি। অথচ এখনই কী রোমাঞ্চ ও আর শিহরণ। গড়পড়তা হোঁচট খাচ্ছে বড় বড় দলগুলো। তাতে মনে হচ্ছে এবারের গ্রুপের সব গ্রুপই ডেথ গ্রুপ। একের পর এক চমক উপহার দিয়ে যাচ্ছে ছোট দলগুলো। এবার সেই তালিকায় ঢুকে গেল জাপান। প্রথম এশিয়ান দল হিসেবে কাল ল্যাটিন কোনো দেশকে হারিয়ে দিল জাপান।

‘এইচ’ গ্রুপের মাঝারি শক্তির দল চারটিই। তবু অন্যদের তুলনায় জাপানিজদেরই একটু পিছিয়ে রাখা হচ্ছিল। গ্রুপের উদ্বোধনী ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল কলম্বিয়া। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই পাল্টে গেল দৃশ্যটা। ম্যাচের মাত্র ৩ মিনিটেই কলম্বিয়ার রক্ষণ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন জাপানের সবচেয়ে বড় তারকা শিনজি কাগাওয়া।

কলম্বিয়ান গোলরক্ষককে অসহায় পেয়ে গোলমুখে শট নিয়েছিলেন এই তারকা। নিজেদের জালে বল প্রবেশ করছে... দৃশ্যটা বড্ড কঠিন। তাই অদ্ভুত এক কা- করে বসলেন কার্লোস সানচেজ। হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে দিলেন তিনি। শাস্তি হিসেবে অবধারিতভাবেই তাকে দেখতে হলো লালকার্ড। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে লালকার্ড দেখার রেকর্ড। তবে রাশিয়ার বিশ্বকাপে প্রথম লালকার্ডটাই দেখতে হলো সানচেজকে।

৩ মিনিটের সেই হ্যান্ডবলটার শেষ পরিণতি হলো ৬ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে জাপানকে এগিয়ে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি কাগাওয়ার। ৩৯ মিনিটে অবশ্য সেই গোলটা ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচটা প্রায় জমিয়ে দিয়েছিলেন হুয়ান কুইন্টেরো। কিন্তু একজনের কম দল নিয়ে কতক্ষণই বা লড়াই করা যায়। ফুটবলের চিরায়িত নিয়মে যাওয়া হওয়ার তাই হলো। ম্যাচের বাকি সময়ে অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারেনি কলম্বিয়া।

৭৩ মিনিটে দারুণ এক হেডে ইয়ুয়া ওসাকো জাপানকে দ্বিতীয়বার এগিয়ে দেন ম্যাচে। এই লিডটা ম্যাচেটর শেষ অবধি ধরে রেখেছে এশিয়ার দলটি। তাতেই ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নামটা খোদাই করে নিল নীল সামুরাইরা।

ম্যাচের আগেই অবশ্য একটা ধাক্কা খেয়েছে কলম্বিয়া। চোটের কারণে দলের সেরা প্লে-মেকার হ্যামেস রদ্রিগেজ প্রথম একাদশে ছিলেন না। সেই ধাক্কা সামলে নেওয়ার সুযোগও পায়নি দক্ষিণ আমেরিকান দলটি। ম্যাচে জাপানের প্রথম ভালো আক্রমণে তছনছ কলম্বিয়ার রক্ষণ। শুধু গোল খেলেও মেনে নিতে পারত হোসে পেকারম্যানের দল। কিন্তু মাত্র ৩ মিনিটেই একজন খেলোয়াড় হারিয়ে ফেলাটা পুরো ম্যাচেই ভুগিয়েছে কলম্বিয়াকে। ম্যাচে সময় যত গড়িয়েছে, ততই দাপট বেড়েছে জাপানের। বল দখলে এগিয়ে ছিল তারা, আক্রমণ সৃষ্টিতেও। ৯০ মিনিট একজন খেলোয়াড় বাড়তি পাওয়ার সুবিধা ভালোভাবেই নিয়েছে জাপান।

ম্যাচের শুরুতেই তাই কৌশল বদলাতে হয়েছে। উইঙ্গার হুয়ান কুয়াদ্রাদোকে তাই নেমে যেতে হলো ৩১ মিনিটেই। মধ্য মাঠে বাড়তি একটু স্থিতি আনার সেই চেষ্টা একটু পরেই কাজে এসেছে। ৩৯ মিনিটে রাদামেল ফ্যালকাওর বুদ্ধিমত্তায় ডি বক্সের একটু বাইরে ফ্রি-কিক পায় কলম্বিয়া। সে সময়ে হয়তো সবার মনেই হামেসের জন্য আফসোস হয়েছিল। আহা, এমন জায়গা থেকে ফ্রি-কিকে গোল করার সেরা লোক তো হামেসই!

এর আগেই অবশ্য মাঠে নেমেছেন হামেস। গোলদাতা কিন্তেরোর বদলি হয়েই। কিন্তু ৩০ মিনিটের বেশি হাতে পেয়েও দলকে কোনো গোল এনে দিতে পারেননি। ৭৮ মিনিটে নিশ্চিত গোলের একটা সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তার নেওয়া শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন ৫ মিনিট আগেই স্কোর বোর্ড নাম লেখানো ওসাকো। বাকি সময়ে নামের পাশে শুধু একটা হলুদকার্ডই লেখাতে পেরেছেন হামেস।

আজকের খেলা

পর্তুগাল-মরক্কো (সন্ধ্যা ৬টা)

উরুগুয়ে-সৌদি আরব (রাত ৯টা)

ইরান-স্পেন (রাত ১২টা)

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist