নিজস্ব প্রতিবেদক
বাড্ডায় আ.লীগ নেতা হত্যা
ডিশ ব্যবসা নাকি কাউন্সিলর প্রার্থিতার জের
কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া দুজন শনাক্ত
রাজধানীর উত্তর বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া দুই শুটারকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই দুই শুটার হলেন জুয়েল ও মিরাজুল। ঘটনাস্থলের পাশের ভবনে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা দুজনকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট। সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, দুজন যুবক দৌড়ে পালাচ্ছেন। সাদা টি-শার্ট পরা জুয়েল সামনে এবং লাল টি-শার্ট গায়ে মিরাজুল পেছনে ছিলেন। এদের মধ্যে জুয়েলের হাতে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। তবে তারা বাড্ডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না।
স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। নবগঠিত ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ফারুক আহমেদ ও নিহত ফরহাদ আলী প্রার্থী ছিলেন। গত ২১ এপ্রিল বেরাইদ ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের ছোট ভাই কামরুজ্জামান দুখু নিহত হন। ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান বাদী হয়ে ফারুক আহমেদসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। আদালতে ফারুক আহমেদসহ ২১ জন হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। আদালত ফারুক আহমেদসহ চারজনকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। ফারুক আহমেদ স্থানীয় সংসদ সদস্য রহমত উল্লাহর ভাগ্নে। তিনি ওই এলাকায় ভাগ্নে ফারুক নামে পরিচিত।
এদিকে, হত্যার মূল কারণ সম্পর্কে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সুস্পষ্টভাবে কিছু না বললেও বেশ কিছু বিষয়কে সামনে রেখে হত্যাকান্ডের তদন্ত চলছে। এসবের মধ্যে স্থানীয় অটো ও ভাসমান ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ, ডিস ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর হিসেবে ফরহাদ আলীর মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত করছেন।
ফরহাদ আলীকে হত্যার পেছনে অনেকগুলো কারণ নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও দুটি কারণ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে তার পরিবার। স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোয়ন পাওয়া অথবা ডিস ব্যবসার কারণে চলমান দ্বন্দ্বের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ বড় ছেলে আবিদ হাসানের। তিনি বলেন, বাবা স্থানীয় নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। যদিও নির্বাচনটি স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বাবার সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল। এই কারণেও তাকে হত্যা করা হতে পারে।
গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে স্থানীয় বায়তুস সালাম জামে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে গুলিবিদ্ধ হন ফরহাদ আলী (৫৫)। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসীদের দুইটি গুলি তার শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন। এদিকে, গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, মামলা নথিভুক্ত না হলেও হত্যাকান্ডের তদন্ত শুরু হয়েছে। শনাক্ত হওয়া দুজনকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
"