জাহিদুল ইসলাম
আজ উদ্বোধনী ম্যাচ
মুখোমুখি রাশিয়া-সৌদি আরব
চার বছরের অপেক্ষার পালা শেষ। আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ তথা ফুটবল বিশ্বকাপের একবিংশতম আসর। স্বাগতিক রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে রাশিয়া বিশ্বকাপের। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় মস্কোর লিঝনিকি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দল দুইটি। সবচেয়ে দুর্বল দুইটি দলের ম্যাচের মধ্য দিয়ে গোড়াপত্তন হচ্ছে বিশ্বকাপের এবারের আসরের। ২০১৮ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ৩২ দলের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচে আছে রাশিয়া। তাদের র্যাঙ্কিং ৭০। তাদের থেকে তিন ধাপ এগিয়ে সৌদি আরব রয়েছে ৬৭তম স্থানে। আয়োজক হিসেবে সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে রাশিয়া। তাদের বাছাইপর্ব খেলতে হয়নি। তবে বিশ্বকাপের ময়দানি লড়াইয়ে মাঠে নামার আগে তাদের প্রীতি ও প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না। সবশেষ সাত ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি তারা। তারপরও এই দলটিকে নিয়ে আশাবাদী রাশিয়ার কোচ স্তানিসলাভ চেরিসভ। কারণ প্রথমবারের মতো রাশিয়া তাদের ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে। সে কারণে দলটিকে ঘিরে স্বাগতিক দেশের মানুষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। খেলোয়াড়রাও বেশ উজ্জীবিত। ঘরের মাঠে নিজ দর্শকদের আকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে তারা সৌদি আরবের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করার প্রত্যাশা করতেই পারে। প্রত্যাশা করতে পারে বিশ্বকাপে তাদের সেরা সাফল্য পাওয়ার। ঘরের মাঠে সৌদি আরবের বিপক্ষে ড্র হতে পারে রাশিয়ার জন্য ভয়াবহ ফল।
কারণ ‘এ’ গ্রুপে তাদের জন্য অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল সৌদি আরব। অপর দুই দল মিসর ও উরুগুয়ে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে মিসর রয়েছে ৪৫তম স্থানে। তাদের রয়েছে মোহাম্মদ সালাহ ও সাঈদের মতো তারকা ফুটবলার। আর উরুগুয়ে তো এই গ্রুপের হট ফেভারিট। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তারা রয়েছে চতুর্থদশতম স্থানে। তাদের রয়েছে লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানিদের মতো বড় মাপের তারকা। তাদের বিপক্ষে রাশিয়া জয় পেলে সেটা অঘটন হিসেবেই ধরে নেবে ফুটবল বোদ্ধারা। আজ সৌদি আরবের বিপক্ষে জয় পেলে পরের রাউন্ডে যাওয়ার ক্ষেত্রে তারা রাশিয়া এগিয়ে থাকবে।
ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এর আগে চারটি আয়োজক দেশ সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল। সেই তালিকায় আছে ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রাজিল ও দক্ষিণ কোরিয়া। স্বাগতিক রাশিয়া অনুপ্রেরণা নিতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে। ১৬ বছর আগে তারা আয়োজক দেশ হিসেবে সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল।
এদিকে সৌদি আরব ১২ বছর পর আবার বিশ্বকাপে এসেছে। সবশেষ তারা ২০০৬ বিশ্বকাপে খেলেছিল। তাদের দলটি নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত। এই দল নিয়ে সৌদি আরব বেশি আশাবাদী। ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছিল সৌদি আরবের। তারপর আরো তিনবার বিশ্বকাপে খেলেছে তারা। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে সৌদি। বিশ্বকাপে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য শেষ ষোলো। ১৯৯৪ সালে গ্রুপ পর্বে নেদারল্যান্ডস ও মরক্কোকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিয়েছিল সৌদি। তারপর আর গ্রুপ পর্বের বাধা পেরুতে পারেনি তারা। ২০০২ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে লজ্জাজনকভাবে ৮-০ গোলে হেরেছিল তারা। তবে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চায় তারা। রাশিয়াকে হারিয়ে শুভ সূচনা করতে চায় বিশ্বকাপে। সৌদি আরবের বড় কোনো তারকা নেই। তারপরও তারা স্বপ্ন দেখতে পারে আল আবেদ, আল মুওয়াল ও আল শেহরিকে ঘিরে। আবেদ বাছাই পর্বে পাঁচ গোল করেছেন। আল মুওয়াল সৌদি আরবের হয়ে সেই গোলটি করেছেন যে গোলটিতে তাদের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়েছিল। আর শেহরি হলেন সৌদি আরবের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। তিনি ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন এবং তার বর্তমান বয়স মাত্র ২৭ বছর। তলানির দুই দলের লড়াই হলেও উদ্বোধনী ম্যাচটি যে হাড্ডাহাড্ডি হবে সেটা কিন্তু অনুমেয়।
"