পাঠান সোহাগ

  ১৪ জুন, ২০১৮

পা ফেলার জায়গা নেই ট্রেনে

রেলপথে যাত্রা স্বস্তির। কিন্তু যখন ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ চেপে বসে ট্রেনে, তখন সেই যাত্রা অস্বস্তির হয়ে ওঠে। এখন ঈদযাত্রার রেলে এমনই অস্বস্তি নিয়ে যাত্রা করতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষকে। ঈদযাত্রার শুরুর দিন থেকেই প্রতিটি ট্রেন ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ নিয়ে স্টেশন ছাড়ছে। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে এখন উপচে পড়া ভিড়। ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে ট্্েরনের ভেতর পা ফেলার জায়গা থাকে না। ছাদেও পর্যাপ্ত মানুষ। এই ট্রেনগুলোই যখন বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছায়, তখন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে ট্রেনের বগি, ছাদ এমনকি ইঞ্জিনের রেলিং পর্যন্ত। এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে বাড়ি ফিরছে মানুষ স্বজনের সঙ্গে ঈদ করতে।

অতিরিক্ত যাত্রী চেপে বসায় বাধ্য হয়ে রেলগুলোকে চলতে হচ্ছে ধীরগতিতে। ফলে বেশ কিছু ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে যেমন পৌঁছতে পারছে না; ঠিক একই কারণে স্টেশন ছাড়তেও দেরি হচ্ছে। কোনো কোনো ট্রেনের ক্ষেত্রে এই বিলম্ব দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত গড়াচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। যদিও দুর্ভোগ লাঘবে বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু হয়েছে; কিন্তু যাত্রীর চাপ সামাল দিয়ে তাও স্বস্তি আনতে পারছে না যাত্রাতে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রী ভোগান্তি কমাতে ও অধিক যাত্রী বহনে গতকাল বুধবার থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছে। সকাল পৌনে ৯টায় দেওয়ানগঞ্জের উদ্দেশে প্রথম বিশেষ ট্রেনটি ছেড়ে যায়। প্রতিদিন সকাল সোয়া ৯টায় একটি ট্রেন কমলাপুর থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশে, রাত সোয়া ৯টায় একটি রাজশাহীর উদ্দেশে এবং রাত ১০টা ৫০ মিনিটে একটি পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এ ছাড়া একটি বিশেষ ট্রেন রাত ১২টা ৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশে ছাড়বে। এবারই প্রথমবারের মতো ঢাকা-খুলনা-ঢাকা রুটে চলবে বিশেষ ট্রেন। খুলনা রুট ছাড়া বাকি বিশেষ ট্রেনগুলো ঈদের পর সাত দিন চলাচল করবে। এগুলো বিশেষ কয়েকটি স্টেশনে থামবে।

এ বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতেই ঈদ স্পেশাল সার্ভিস চালু করা হয়েছে। স্পেশাল ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি চলছে। তা ঈদের পর সাত দিন চলবে। এসব ট্রেনের ফিরতি টিকিট নিজ নিজ স্টেশনে পাওয়া যাবে।

গতকাল কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন আসছে না। অপেক্ষায় বসে থাকতে হচ্ছে স্টেশনে। কখন গাড়ি ছাড়বে, কখন বাড়ি যাবে, এ নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই। ট্রেনগুলো স্টেশন ছাড়ার আগেই যাত্রীতে কানায় কানায় ভরে যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে, রেলিং ও ছাদে যে যেখানে পারছে উঠে পড়ছে। কথা হয় রুস্তম আলীর সঙ্গে। রংপুর যাবেন। তার ট্রেনটি দেড় ঘণ্টা ধরে স্টেশনেই দেরি করছে। ট্রেনে অনেক ভিড়। অনেকে ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে উঠেছে। ময়মনসিংহ যাবেন রুকন মিয়া। তিনি বলেন, ট্রেনে এত মানুষ সিট পেতেই কষ্ট। স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন করিম, সেকুল ও মামুন। তাদের কোনো টিকিট নেই। তারা বলেন, এত ভিড়। ট্রেনের ভেতরে যাব না। ছাদে উঠে বাড়ি যাব। টিকিট না কাটলেও টাকা ঠিকই লাগবে। রেল পুলিশ ও আনসার সদস্যদের পথে টাকা দিতে হবে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকারীরা সার্বক্ষণিক ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। নিম্ন আয়ের মানুষজন ভাড়া বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে, ইঞ্জিনে বা বগির জোড়ায় উঠে বসেন।

রেলস্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, ট্রেনগুলোর মধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, লালমনিরহাট এক্সপেস ও দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ছাড়তে ৩০ মিনিটের মতো দেরি হয়েছে। বাকি ট্রেন সঠিক সময়েই ছেড়ে গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist