গাজীপুর প্রতিনিধি
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট
ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের দখলে অর্ধেকই
বালুর ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ভ্যানের দখলে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যজুড়ে চার লেনের মহাসড়কটির অর্ধেকই ওইসব গাড়ি পার্কিং করে দখল করে নিয়েছে। এ কারণে মহাসড়কটিতে প্রায় প্রতিদিন দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। দেখা গেছে, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে তেলিপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যজুড়ে চার লেনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের
দুই পাশে প্রায় দুই লেনই দখল করে পাকিং করা হয়েছে বালুর ট্রাক- কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ। এতে চার লেনের মহাসড়কটির দুই লেন বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি দুই লেন দিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। ওইসব গাড়ি পার্কিং করার সময়ও অন্য যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এভাবে মহাসড়কটির দুই পাশে গাড়ি পার্কিং করায় ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এভাবে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে বালুর ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ভ্যান। এ থেকেই হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে থাকতে হচ্ছে বিভিন্ন পেশার মানুষকে। চার লেনের মহাসড়কের অর্ধেকই গাড়ি পার্কিংয়ের দখল। এদিকে প্রশাসন যেন দেখেও দেখছে না। মহাসড়কে কোথাও গাড়ি পার্কিং করলে পুলিশ রেকার দিয়ে আটকে করছে জরিমানা। অথচ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে ওইসব অবৈধ পার্কিং সরাতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান উদ্দিন জানান, চান্দনা চৌরাস্তা একটি ব্যস্ততম এলাকা। কিন্তু ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের অর্ধেক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ট্রাকস্ট্যান্ড। এখানে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে বালুর ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ। এতে করে দূরপাল্লা ও স্থানীয় যানবাহনগুলো চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এতে যানজটও লেগে থাকছে প্রতিদিন। এর ফলে মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখান থেকে ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের স্ট্যান্ড সরানোটা খুবই প্রয়োজন।
এ বিষয়ে নাওজোর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. অহিদুজ্জামান জানান, ওইখানে অনেক আগে থেকেই ট্রাকস্ট্যান্ড ছিল। পরে তা ভেঙে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেন করা হয়। কিন্তু ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য অন্য কোথায় জায়গা না থাকায় মহাসড়কেই ট্রাক পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া পোশাক কারখানার মালামাল লোড-আনলোড করতে কারখানায় ভেতর তেমন জায়গা না থাকায় মহাসড়কে রাখা হচ্ছে। ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত জায়গা হলেই এ সমস্যার সমাধান হবে। এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। অচিরেই একটি ব্যবস্থা করা হবে।
ট্রাক শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন জানান, এখানে একটি ট্রাকস্ট্যান্ড ছিল। পরে তা ভেঙে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি চার লেন করা হয়। কিন্তু ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা করা হয়নি। এর ফলে ওই মহাসড়কের দুই ধারেই একটু জায়গা নিয়ে গাড়ি পার্কিং করা হয়। ট্রাকস্ট্যান্ডের জন্য জায়গার ব্যবস্থা হলেই সব ট্রাক এখান থেকে সরিয়ে ফেলা হবে।
গাজীপুর সড়ক ও জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. গাউস-উল-হাসান মারুফ বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ ও পরিবহন সমিতি। আমরা রাস্তা ও কন্টাকশনের বিষয়টা দেখি।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, অচিরেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে গাড়ি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
"