মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৯ মে, ২০১৮

চোরাচালানিরা বেপরোয়া

মাদকের নরকরাজ্য মাধবপুর

মাদকের নরকে পরিণত হয়েছে হবিগঞ্জের মাধবপুর। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ, বিজিবি, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হাতে ধরা পড়ছে মাদকের চালান। অর্থের বিনিময়ে মাদক বহনকারী কামলা এবং চুনোপুঁটি মাদক কারবারি ধরা পড়লেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত অস্ত্র ও চোরাচালানকারীসহ মাদকের মূল হোতারা রয়েছে বেশ আরামে। এই রাঘববোয়ালরা মাদকবিরোধী অভিযানের বাইরে থাকায় মাধবপুরে মাদকের প্রসার রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাধবপুর উপজেলার ১৭ জন অস্ত্র ও চোরাচালানির নাম প্রকাশ পায়। ওই ১৭ জন ধর্মঘর, চৌমুহনী, বহরা, শাহজাহানপুর ও জগদীশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। এদের সহকারী হিসাবে মাদক চোরাকারবারিসহ শতাধিক অপরাধীর রয়েছে মাধবপুরে। তাদের বেপরোয়া কাজ কারবারে অনেকেই জিম্মি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচলানা করে। এরপরও পাল্লা দিয়ে মাদকের বিস্তার দিন দিন বাড়ছে এ এলাকায়।

গ্রামেগঞ্জের সব স্থানেই হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। উপজেলার শাহজাহানপুর, জগদীশপুর ও নয়াপাড়া এই তিনটি ইউনিয়নে রেল ও সড়কপথ এমনকি চা বাগান বেষ্টিত হওয়ায় মাদকের দোজখ গড়ে ওঠেছে এসব এলাকায়। অভিযোগ রয়েছে, একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের পৃষ্ঠপোষকতায় মাদক ও চোরাচালানিরা হয়ে উঠেছে নিয়ন্ত্রণহীন। তারা কাউকে পরোয়া করে না। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে মাদক ও অস্ত্র। এমনকি মহিলা ও শিশু কিশোরদের মাধ্যমে আনা-নেওয়া করা হয় এসব মরণ পণ্য।

২০০৮ সালে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‌্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন মাদক চোরাকারবারিদের হোতা নয়াপাড়া ইউনিয়নের আবদুল হাকিম। এর আগে তেলিয়াপাড়া ইউনিয়নের মাদক সম্রাট আবদুল সোবহান মাদক মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়। তাদের উত্তরসূরিরা এখন মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেই মাধবপুরে নির্বিঘেœ চলছে মাদক কেনাবেচা। সীমান্তের কাঁটা তার ভেদ করে ভারত থেকে ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য মাধবপুরে প্রবেশ করে সড়ক ও রেলপথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করা হয়। শতাধিক মাদকের স্পট ছাড়াও এখানে ভ্রাম্যমাণ মাদক বিক্রেতার সংখ্যা রয়েছে কয়েকশত। মাদক কারবারিদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলাব্যাপী তাদের দাপটও বেড়েই চলেছে। গত বছর মাদক কারবারি হাবিব ও তার পরিবারের লোকজন সোহাগ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে। উপজেলা ধর্মঘর থেকে বাঘাসুরা ১১টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামেই রয়েছে মাদক বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট ও রমরমা। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক খাইরুল আলম বলেন, ‘লোকবলের অভাবে বড় চালান আটক করা সম্ভব হয় না। তিনি জানান, খুচরা বিক্রেতা ও সেবনকারীদের আটক করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়ে থাকে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এস এম রাজু আহমেদ জানান, মাদক নির্মূলকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে মাদকবিরোধী সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধি, মাদক উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মাদক সংশ্লিষ্টরা যেই হোক না কেন তাকে ধরা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist