গাজী শাহনেওয়াজ

  ২৮ মে, ২০১৮

খুলনা সিটির নির্বাচনে তিন কেন্দ্রে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে ইসি

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। সরেজমিন তদন্তের পর চলতি সপ্তাহে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ইসিতে জমা দেবে। সেখানে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতরা প্রভাবশালী মহলের সদস্য হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কৌশলী সুপারিশ জানানো হতে পারে।

গত ১৫ মে কেসিসিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ২৮৯ কেন্দ্রের কয়েকটিতে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। অস্বাভাবিক ভোট পড়ে ১১টি কেন্দ্রে, যার মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে ৯০-৯৯ শতাংশ এবং আটটি কেন্দ্রে ৮০-৮৯ শতাংশ ভোট পড়ে। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে তিন কেন্দ্রের বাইরে ভোট কার্যক্রম স্থগিত না রাখতে মৌখিক নির্দেশ ছিল বলে জানা গেছে। সিটি ভোটের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন এমন কয়েকজনসহ ইসির কয়েকজন এ প্রতিবেদককে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কিন্তু ভোট চলাকালে গুরুতর অনিয়ম পাওয়া মাত্র তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়। এসব কেন্দ্রের অনিয়ম তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইসি। এ সিটির কেন্দ্র সংখ্যা ছিল ২৮৯টি।

স্থগিত কেন্দ্রগুলোর প্রকৃত চিত্র অনুসন্ধানে কমিশনের যুগ্ম সচিব খন্দকার মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটির অন্য দুইজন হলেন উপসচিব ফরহাদ হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহ আলম। গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার এ তিন দিন সরেজমিন পরিদর্শন করে কমিটি এখন রিপোর্ট প্রস্তুত শুরু করেছে।

সূত্র মতে, নানা অনিয়মের অভিযোগে কেসিসি নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্র ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। স্থগিত হওয়া কেন্দ্রগুলো হলো ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (একাডেমিক ভবন-২), ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়। স্থগিত কেন্দ্রে আগামী ৩০ মে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই অনিয়ম তদন্তে মাঠে নামে ইসি। তিন সদস্যের কমিটি স্থগিত কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসার, পুলিশ কর্মকর্তা, আনসার এবং প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের বক্তব্য নিয়েছে। পুলিশ ছাড়া সবাই অনিয়মের বিষয়ে ইসি কমিটির প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভোট কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে প্রকাশ্যে সিলমারার ঘটনাটি তাদের ধারণার বাইরে ছিল। কারণ সবাই ভোটার সেজে কেন্দ্রে ঢুকে ভোট মেরে দ্রুতই সটকে পড়ে। কিন্তু তারা কেন্দ্রের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কিছুই করতে পারেননি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা বলেন, জোরপূর্বক ১০-১২ জনের একটি দল ভোটকক্ষে ঢুকে ব্যালট ছিনিয়ে নেয় এবং দ্রুত সিল মেরে কেন্দ্র ত্যাগ করেন। প্রত্যেকটি ভোট একটি বড় দলের প্রতীকেই মারা হয়। আনসার সদস্যরা বলেন, আমরা কক্ষের বাইরে ভোটারদের লাইন ঠিক রাখতে কাজ করি। কিন্তু হঠাৎ কিছু লোক কেন্দ্রে ঢুকে কিছুক্ষণ পরে তারা একত্রে বেরিয়ে যায়। আর বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টরা বলেন, তাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ব্যালটে সিল মারে ওই প্রবেশকারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির একজন বলেন, স্থগিত কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সবার বক্তব্য নিয়েছি। পুলিশ ছাড়া সবাই প্রকৃত ঘটনার কথাই জানিয়েছেন। আমরা প্রতিবেদন তৈরি করছি। চলতি সপ্তাহে কমিশনে উত্থাপন করব। তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ঘটনার বর্ণনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ জানাব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist