শাহ্জাহান সাজু
নতুন খাত রোহিঙ্গা পুনর্বাসন
বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকা!
আসন্ন ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ বরাদ্দের নতুন খাত হিসেবে থাকছে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন। এ খাতে সরকার দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে যাচ্ছে। এই খাতে সরকারি অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৫০০ কোটি টাকা। সংস্থাটির কাছ থেকে ওই অর্থ সম্পূর্ণ অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে বরাদ্দ দুই হাজার কোটি টাকা তাদের নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকার আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনীকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত। গত নভেম্বর মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পুনর্বাসন করা হবে। ১ লাখ ৩ হাজার ২০০ মানুষের বসবাসের জন্য ১২০টি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ভাসানচরের অভ্যন্তরে সড়ক, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, নলকূপ বসানোসহ যাবতীয় অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে বাজেট প্রণয়নের অগ্রগতি পর্যালোচনার সময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন সংক্রান্ত নতুন খাতের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে এই প্রাক্কলন দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, আগামী ৭ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আগামী বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। বিষয়টি অর্থমন্ত্রী নিজেই একাধিকবার উল্লেখ করেছেন। সে হিসাবে আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের পরিমাণ চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এডিপিতে বরাদ্দ আছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের মোট এক লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার এডিপির মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬০ হাজার কোটি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে সাত হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা খরচের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ধরা হচ্ছে ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটের তুলনায় এটি ৩ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরে জিডিপির আকার ধরা হয় ২২ লাখ ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
"