আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস
গাজায় বিক্ষোভে গুলি : নিহত ৫২
জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খোলা নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গাজা। আর বিক্ষোভরতদের দমাতে তাদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। এতে ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২ হাজার ৪০০ জন। এদের মধ্যে ৭৪ জন ১৮ বছরের নিচে, ২৩ জন নারী এবং ৮ জন সাংবাদিক রয়েছেন বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকালে এ ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ আন্দোলনের আওতায় গাজার শাসনক্ষমতায় থাকা হামাস ছয় সপ্তাহ ধরে সীমান্তে বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভে ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি অংশ নিয়েছে। তারা সীমান্তের বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা করে। এ ‘সহিংস দাঙ্গা’ শুরু করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় সেনা সদস্যরা।
খবরে বলা হয়, জেরুজালেমে দূতাবাস খুলছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দূতাবাস ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস হিসেবে কার্যক্রম চালাবে। মূলত তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা মনে করে, এই দূতাবাস খোলা মানে পুরো জেরুজালেমের নিয়ন্ত্রণ নিতে ইসরায়েলকে ওয়াশিংটনের স্বীকৃতি দেওয়া। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনিরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এ দিন তেল আবিবের পরিবর্তে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে ফিলিস্তিনিরা। গতকালের বিক্ষোভে অংশ নেয় বিপুল পরিমাণ ফিলিস্তিনি, যা ছিল গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় অকল্পনীয়।
এদিকে সীমিত আকারে এ কার্যক্রম শুরুর দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাংকা ট্রাম্প ও জামাতা জ্যারেড কুশনার।
১৯৪৮ সালে ইসরাইল ফিলিস্তিনের থেকে ওই অঞ্চল দখলে নেওয়ার পর থেকে ইসরাইলিরা এটিকে ‘নাকবা’ বা বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালন করছেন। প্রতি বছর ইসরাইলি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার এ দিন ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভ করে থাকে। এ বছর তার ঠিক একদিন আগে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের পদক্ষেপ নেওয়ায় ফিলিস্তিনিরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায়।
স্থানীয় সাংবাদিক মারাম হুমায়দ আল জাজিরাকে বলেন, গত সাত সপ্তাহের বিক্ষোভের তুলনায় অংশগ্রহণের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ডিসেম্বরে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি হিসেবে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি তীব্র চাপ সৃষ্টি করা এবং আতংকিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে যাওয়ার জন্য বিক্ষোভের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ জনসংখ্যা ২ লাখ শরণার্থী।
৩০ মার্চ বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ৮৬ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
"