নিজস্ব প্রতিবেদক
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন কার্যকর করা দরকার
খায়রুল হক
সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, দুর্ঘটনা কী পরিমাণে বেড়েছে! কারো হাত চলে যাচ্ছে, পা চলে যাচ্ছে, মাথা চলে যাচ্ছে। এভাবে কোনো সভ্য দেশ চলতে পারে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন কার্যকর করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে আইন পরিবর্তন করা
প্রয়োজন বলেও তার মত। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন খায়রুল হক। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় এই বৈঠক হয়। বৈঠকে খায়রুল হকের সঙ্গে ছিলেন আইন কমিশনের সদস্য সাবেক বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর।
সুপ্রিম কোর্টের সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের বৈঠকে আর্থিক বিরোধ, সালিশ আইন, ট্রাফিক আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, ট্রাফিক আইন নিয়ে চিন্তাভাবনা করার কথা বলেছি। ট্রাফিক আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করি। কিন্তু তা নির্ভর করে যদি দেশের লোক মনে করে পরিবর্তন দরকার। আর যদি মনে করে, দরকার নেই তা হলে হবে না। মানুষ মরতেই থাকবে।
খায়রুল হক বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে সর্বোচ্চ ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- ও ৪০০ টাকা জরিমানা। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে যদি এ অবস্থা হয় তা কেউ লাইসেন্স নেওয়ার তেমন গরজ বোধ করবে না।
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দুর্ঘটনা রোধে দরকার আইন পরিবর্তন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ। শাস্তি বাড়িয়ে হবে না। আইন প্রয়োগের প্রয়োজন আছে। মনোভাব পরিবর্তনেরও প্রয়োজন আছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত দেড় বছরে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বেই সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই তরুণ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা অনুসারে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে প্রাণ যাওয়া মানুষের ৫৪ শতাংশই ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর ১৫ বছরের নিচের শিশু সাড়ে ১৮ শতাংশ। এই দুই শ্রেণিকেই দেশের ভবিষ্যৎ ও অর্থনীতির মূল শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সড়ক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ২০১৫ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি দেশের মোট দেশজ জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১.৬ শতাংশের সমান।
"