নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ মে, ২০১৮

দুদকের গণশুনানি

অভিযোগ করেও কাজ হয় না বিআরটিএতে

বিআরটিএ’তে অনিয়ম নিয়ে দুদকের উদ্যোগে আয়োজিত গণশুনানিতে হাজির হয়ে আগের শুনানিতে অভিযোগ জানিয়েও কাজ না হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন দুইজন। গতকাল সোমবার ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিআরটিএ সংক্রান্ত দুর্নীতি প্রতিরোধ ‘ফলোআপ গণশুনানি’তে এই অভিযোগ করেন তারা। বিআরটিএ’র ভেতরে-বাইরে দালালের দৌরাত্ম্য, অর্থের বিনিময়ে অযোগ্যদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া, বাসগুলো নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেওয়ার অভিযোগও জানান শুনানিতে উপস্থিতরা।

গণশুনানির ?শুরুতে ধানমন্ডির বাসিন্দা রেহানা সালাম বলেন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গত দুই বছর আগে এমনই একটি শুনানিতে এসেছিলাম। তখন বিআরটিএ’র কর্মকর্তা বলেছিলেন, দ্রুত মালিকানা পরিবর্তন করে আমার নামে নিবন্ধন দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই কাজটি হয়নি।

অভিযোগ শুনে বিআরটিএ’র উপপরিচালক মাসুদ আলম বলেন, যার কাছ থেকে তিনি গাড়ি কিনেছেন, তাকে তিনি চেনেন না, প্রয়োজনীয় নথিপত্রও তিনি উপস্থাপন করতে পারেননি তখন যে কারণে এত সময় লেগেছে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উনার কাজটি হবে।

গাড়ির ফিটনেস ও নিবন্ধনের জন্য বিআরটিএতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন উত্তরার বাসিন্দা আসলাম সেরনিয়াবাত।

তিনি বলেন, আমি ১০ বছর আগের একটি বিষয়ের কথা বলছি। নতুন তিনটি গাড়ির নিবন্ধনের জন্য বিআরটিএ’তে আবেদন করেছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দুদকের গত গণশুনানিতে দ্রুত কওে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু দুদকের ফলোআপ গণশুনানির কথা শুনে একটি গাড়ির নিবন্ধন হলেও বাকি দুইটি গাড়ির নিবন্ধন হয়নি।

বিআরটিএ কর্মকর্তা মাসুদ বলেন, নিবন্ধনের জন্য যে ফি তা পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দিতে হয়, তিনি যে টাকা দিয়েছেন তা আমাদের কাছে কোনো নথি আসেনি, এছাড়া গাড়ির পর্যাপ্ত নথিপত্র তিনি দেখাতে পারেননি, বিক্রেতাও হাজির করাতে পারেননি।

দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মাহমুদ হাসান। গণশুনানি সঞ্চালনা করেন দুদকের ঢাকা বিভাগের পরিচালক নাসিম আনোয়ার।

দোহারের বাসিন্দা প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম অভিযোগ করেন, রাজধানীর কোনো বাসই বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া মানছে না, বিআরটিএ এটা দেখছে না।

মাসুদ আলম অভিযোগকারীর উদ্দেশে বলেন, আপনি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করুন, আমাদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। সব বাসকে ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর বিআরটিএ থেকে নির্ধারিত ভাড়া আদায় করতে বলা হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী বিআরটিএ কর্মকর্তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন।

একজন বলেন, রাজধানীতে চলাচল করা কোনো বাস আপনাদের নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী চলে, সেই বিষয়ে একটি পরিবহনের নাম আপনারাই বলুন। তখন বিআরটিএ’র কোনো কর্মকর্তা মুখ খোলেননি।

এ সময় সঞ্চালক নাসিম আনোয়ার বলেন, তারা যেহেতু এই প্রশ্নের কোনো জবাব দিচ্ছেন না তাহলে ধরেই নিলাম রাজধানীতে কোনো বাস বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া মেনে চলে না।

দুদক কমিশনার নাসিরউদ্দীন তখন বিআরটিএ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সুপ্রভাত পরিবহনসহ কয়েকটি বাসের নাম এসেছে, যারা নিজেদের মতো করে ভাড়া নিয়ে থাকে, সেসব বাসের বিরুদ্ধে বিআরটিএ থেকে কি ব্যবস্থা নিল, তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুদককে অবহিত করতে হবে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফ আর খান অভিযোগ করেন, বিআরটিএ আগের চেয়ে ‘ভালো হয়নি’। এই প্রতিষ্ঠানের বাইরে ও ভেতরে দালালে ভরা, এই দালালদের দূর করা হয়নি। বিআরটিএ’র আশ্রয়-প্রশ্রয় না থাকলে দালালদের দৌরাত্ম্য থাকত না। গাড়ি নিবন্ধনে গিয়ে বিআরটিএ’তে বছরের পর বছর হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ তোলেন এই আইনজীবী। এসব অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিএ কর্মকর্তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist