নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ এপ্রিল, ২০১৮

তাবলিগের দুই পক্ষে আবারও মারামারি ৬ মুরব্বির ওপর

নিষেধাজ্ঞায় সমঝোতা

পুরনো দ্বন্দ্বের জের ধরে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে ফের মারামারি হয়েছে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে। গত বিশ্ব ইজতেমার আগে থেকে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছেন তাবলিগের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি। বাংলাদেশে তাবলিগের একপক্ষ মাওলানা সাদের পক্ষে, অন্যপক্ষ তার বিরুদ্ধে। তাদের রেষারেষিতে গত ইজতেমায় অংশ না নিয়েই ফিরতে হয়েছিল তাবলিগের এই নেতাকে। বিষয়টি সরকার পর্যন্ত গড়িয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে গতকাল শনিবার সকালে কাকরাইল মসজিদে তাবলিগের ঢাকার আমিরদের একটি বৈঠককে কেন্দ্র করে তাদের বিরোধ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। পরে দুপুরে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল পর্যন্ত তাবলিগ-জামাত সদস্য ওয়াসিফুল ইসলাম ও শুরা সদস্য মাওলানা জুবায়ের কাকরাইলের বাইরে থাকবেন। আর দুইপক্ষের দুইজন করে চারজনকে সাময়িকভাবে কাকরাইলে যাওয়া-আসা নিষিদ্ধ করা হয়। তারা হলেন- আব্দুল্লাহ মনছুর, ড. এরতেজা হাসান, ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ ও ড. আজগর।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাওলানা সাদের অনুসারীরা বৈঠকে যোগ দিতে এলে তাদের বাধা দেন দিল্লির আরেক মাওলানা জুহাইরুল হাসানের অনুসারীরা। তখন বাধে মারামারি।

মাওলানা সাদের অনুসারী আকরাম হোসেন বলেন, বৈঠকে আমরা যেতে চাইলে গেটে আমাদের বাধা দেওয়া হয়। বৈঠকের রুমে ঢুকতে গেলে ওই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ এসে দুইপক্ষকে সরিয়ে দেয়। বাধাদানকারীরা কওমি মাদরাসার ছাত্র বলে জানান তিনি।

আকরাম বলেন, পুলিশ দুই পক্ষেরই শীর্ষ নেতাদের স্থান ত্যাগ করে চলে যেতে বলার পর তারা চলে আসেন। তাবলিগের দুই পক্ষের বিরোধ অবসানে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

ওই কমিটির সদস্য আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমি ঢাকার বাইরে আছি, নিজেদের মধ্যে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রস্থল কাকরাইল মসজিদ, উপমহাদেশে সুন্নি মুসলিমদের সবচেয়ে বড় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূলকেন্দ্র ভারতের দিল্লিতে। মাওলানা সাদের দাদা ভারতের ইসলামি পন্ডিত ইলিয়াছ কান্ধলভি ১৯২০ এর দশকে তাবলিগ জামাত নামের এই সংস্কারবাদী আন্দোলনের সূচনা করেন।

মাওলানা ইলিয়াছের মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ এবং তারপর মাওলানা ইনামুল হাসান তাবলিগের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা ইনামুলের মৃত্যুর পর একক আমিরের বদলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দেওয়া হয় একটি শুরা কমিটির ওপর। এরপর আমির হন মাওলানা জুবায়ের। তার মৃত্যুর পর মাওলানা সাদ আমিরের দায়িত্ব নেন এবং একক নেতৃত্বের নিয়ম ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু মাওলানা জুবায়েরের ছেলে মাওলানা জুহাইরুল হাসান তখন নেতৃত্বের দাবি নিয়ে সামনে আসেন এবং তার সমর্থকরা নতুন করে শুরা কমিটি গঠনের দাবি জানান। কিন্তু সাদ তা প্রত্যাখ্যান করলে বিরোধ বড় আকার ধারণ করে। ভারতে দ্বন্দ্ব মিটে গেলেও মাওলানা সাদের বিভিন্ন বক্তব্যে স্বার্থে আঘাত আসতে পারে বলে বাংলাদেশে তার বিরোধিতা করেছে কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist