নিজস্ব প্রতিবেদক
নথি দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রী বললেন, তারেক আর নাগরিক নন
স্ত্রী-মেয়েসহ নিজের পাসপোর্ট জমা দেন দূতাবাসে
যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের মাধ্যমে তারেক রহমানের পাসপোর্ট বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়ার একটি নথি দেখিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, ‘তার হিসাবে’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। পাসপোর্ট জমা দেওয়ার প্রমাণ দেখাতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ আর তারেক রহমানের উকিল নোটিসের পর গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তারেকের মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টের কপি এবং ব্রিটিশ হোম অফিসের একটি নথি দেখান শাহরিয়ার আলম।
যুক্তরাজ্যের হোম অফিস থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠানো একটি কাগজ তিনি প্রকাশ করেন। এতে তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও তাদের কন্যা জাইমা রহমানের নাম রয়েছে। শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-কন্যা তাদের পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমর্পণ করেছেন। সেখান থেকে ওই পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে। পাসপোর্টগুলো এখন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সেখানে রক্ষিত আছে। গতকাল সন্ধ্যায় গুলশানে নিজ বাসায় শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।
লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার আলম বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। তিনি পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। এ বক্তব্যের পর সোমবার লন্ডনে পলাতক তারেক রহমান প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারকে আইনি নোটিশ পাঠান। ওই নোটিশে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন। নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে শাহরিয়ার আলম জাতির কাছে বা তার কাছে ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নোটিশের ঘটনা প্রকাশের পর বিকেলে বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি সেখানে বলেন, নোটিশ দেওয়ার কথা শুনে খুশি হয়েছেন। বিএনপির যে আইন-আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা আছে, সেটা জেনে ভালো লেগেছে। তিনি বলেন, নোটিশ পেলে জবাবের বিষয়টি দেখা হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০০৮ সালে তারেক রহমান পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। তখন মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এরপর তিনি আর মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেননি। ২০১৪ সালের ২ জুন তিনি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সপরিবারে পাসপোর্ট জমা দেন। সেখান থেকে তা বাংলাদেশের হাইকমিশনে আসে। তিনি বলেন, বিএনপির কেউ দেখতে চাইলে বা আইনগতভাবে কেউ চাইলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পাসপোর্ট জমা দেওয়ায় তারেক রহমানের নাগরিকত্ব কি থাকল নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে পাসপোর্ট ছাড়া থাকার বিষয়টি ভিন্ন। এখন তো তার কাছে বাংলাদেশের কোনো পরিচয়পত্র থাকল না। কেননা, তার কাছে স্মার্ট পরিচয়পত্র নেই। ২০০৮ সালে এটি ছিল না। একমাত্র পরিচয়পত্র ছিল পাসপোর্ট। সেটিও তিনি জমা দিয়েছেন।
তারেক রহমান কি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি তারেক রহমানকে জিজ্ঞেস করুন। তারেক রহমান তৃতীয় কোনো দেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন কি না, সেটা তিনিই (তারেক) বলতে পারবেন।
"