নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে কালবৈশাখীর ছোবল : সড়কে দুর্ভোগ
দিনের শেষে কালবৈশাখীর তা-বে গাছ ভেঙে পড়ে, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীর কয়েক এলাকার মানুষ। গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস শেষে মানুষ যখন ঘরে ফেরার পথে, রাজপথের ওই ব্যস্ততার মধ্যেই সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাস নিয়ে আঘাত হানে কালবৈশাখী।
ঝড়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে রাস্তায় পড়ে যান চলাচলে বিঘœ ঘটে। বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে এবং খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বিঘিœত হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ধানমন্ডি এলাকার বিভিন্ন সড়কে গাছ উপড়ে পড়ার খবর পেয়ে লোক পাঠিয়েছেন তারা। বেশ কিছু গাছ পড়ে গেছে। কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে খবর পাচ্ছি তাতে এগুলো পরিষ্কার করতে গভীর রাত হয়ে যাবে।’
জাহিদ হোসেন জানান, সিটি করপোরেশনের সবগুলো অঞ্চলের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ বের হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও কাজে নেমেছেন। তবে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানজট লেগে গেছে। জায়গামতো পৌঁছাতে সময় লাগছে।
মহাখালীতে একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে বিলবোর্ড ভেঙে পড়েছে একটি গাড়ির ওপরে। এতে গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় সড়কে যান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাসেল শিকদার জানান, তেজগাঁও লাভ রোডে, তেজগাঁওয়ের কুনিপাড়ায়, ধানমন্ডিতে আবাহনী মাঠের কাছে এবং মহাখালীতে গাছ বা গাছের ডাল ভেঙে রাস্তায় পড়ার খবর পেয়েছেন তারা।
ডিপিসিসির নির্বাহী পরিচালক (পরিচালন) এটিএম হারুনুর রশিদ জানান, ঝড়ে তার ও খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তেজগাঁও ও ধানমন্ডি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ডেসকোর সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গুলশান এলাকাতেও প্রায় দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে বলে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়।
এদিকে ঝড়ের পর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পড়ে থাকা গাছ সরানোর কাজ চলায় ধানমন্ডিতে আবাহনী মাঠের সামনে, তেজগাঁওয়ে বিজি প্রেস সংলগ্ন এলাকা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে যান চলাচল রাত ৯টার সময়ও এক প্রকার বন্ধ ছিল। মহাখালী থেকে গুলশানে আসা-যাওয়ার দুই দিকেই ছিল তীব্র যানজট। বনানী থেকে মহাখালীর পথেও দেখা যায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার মিজানুর রহমান জানান, তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, ওই সময় সড়কে যানবাহনের চাপ থাকায় যানজটের ভোগান্তি বেশি হয়েছে।
‘অনেকক্ষণ ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঝড় থামার পর সবাই একসঙ্গে বের হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গাড় পড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সড়কে প্রেসার আছে। তবে আশা করছি ক্লিয়ার হয়ে যাবে।’
"