আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কমনওয়েলথের নতুন নেতা প্রিন্স চার্লস
৩ সেশনে অংশ নিলেন শেখ হাসিনা
কমনওয়েলথের নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত হলেন প্রিন্স চার্লস। গতকাল শুক্রবার কমনওয়েলথ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ দেশের সরকারপ্রধান তাদের নতুন নেতা নির্বাচন-সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন। খবর বিবিসির।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রিন্স চার্লসকে কমনওয়েলথের নেতা নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন বর্তমান কমনওয়েলথ নেতা এবং ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ। আগামীকাল শনিবার রানি তার ৯২তম জন্মদিন পালন করবেন এবং এরই মধ্যে কিছু কিছু দায়িত্ব তিনি রাজপরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যদের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এই অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, ৫৩টি দেশের এই জোটের সম্মেলনে রানি শেষবারের মত যোগ দিচ্ছেন বলে মনে করছেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। কমনওয়েলথ সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে রানি এলিজাবেথ বলেন, কমনওয়েলথ যেভাবে বিকশিত হয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট এবং গর্বিত। ব্রিটেনের রানি বলেন, আপনাদের জন্য দায়িত্ব পালন করা আনন্দের ও সম্মানের বিষয়। অত্যন্ত গর্ব ও সন্তুষ্টির সঙ্গে আমি এই জোটের দায়িত্ব পালন করেছি। এর আগে প্রিন্স চার্লস বলেন, আধুনিক কমনওয়েলথের বড় রকমের ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, আমি আশা করছি এই সম্মেলন আমাদের মধ্যে সম্পর্ককেই শুধু জোরালো করবে না বরং এর ফলে এর প্রত্যেকটি দেশের সব নাগরিকের কাছে এর প্রাসঙ্গিকতা তৈরি হবে।
এদিকে গতকাল কমনওয়েলথ সম্মেলনের তিনটি রিট্রিট সেশনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে লন্ডনের উইন্ডসর ক্যাসেলে হয় প্রথম সেশন। একই স্থানে বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা ৬টায় রিট্রিট সেশন টু ও থ্রি শিরোনামের আরো দুটি আয়োজনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। রাতে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সরকারপ্রধানদের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং একটি কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
কমনওয়েলথ প্রায় ২৪০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতি দুই বছর পর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর এটি লন্ডনে হলো। এর আগের বৈঠকটি হয়েছিল মাল্টায়, ২০১৫ সালে। সবশেষ এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ ভানুয়াতুতে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে সেটি বাতিল করা হয়। দুই দিনের বৈঠক শেষে এক ঘোষণায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নেতারা তাদের সম্মতি প্রকাশ করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুরে লন্ডনের ল্যানক্যাস্টার হাউসে কমনওয়েলথ দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের প্রথম এক্সিকিউটিভ সেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদস্য দেশগুলোর পরিবর্তনশীল চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণে কমনওয়েলথের সংস্কারের দাবি জানিয়ে খ্যাতনামা ব্যক্তিদের নিয়ে একটা গ্রুপ তৈরিরও সুপারিশ করেন।
সদস্য দেশগুলোর পরিবর্তনশীল চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণে কমনওয়েলথের বিভিন্ন সংস্থার ভূমিকা এবং কার্যক্রম পুনর্নির্ধারণ ও পুনর্গঠন করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে নির্ধারিত অর্জনে কমনওয়েলথ সচিবালয়ের আমূল পরিবর্তন এবং পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
কমনওয়েলথের বিভিন্ন উদ্যোগ বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে অনুসরণ করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ মহাসচিবের ঘোষিত ২০২০-২১ কৌশলগত পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে ২০৩০ উন্নয়ন এজেন্ডারও প্রশংসা করেন তিনি। ছয় দিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর ২৩ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
"